বড়লেখায় হাইব্রিড নেট-মিটারিং সোলার প্যানেল পরিদর্শনে-যুগ্ম সচিব ড. আমজাদ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৪:২০:১০ অপরাহ্ন
আশফাক আহমদ,বড়লেখা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের সুজানগর আইডিয়াল আলিম মাদরাসায় পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা জোনালে প্রথম নেট মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এ মিটারের মাধ্যমে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সৌর থেকে এ বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে জানায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সুজানগর আইডিয়াল আলিম মাদ্রাসার সদ্য স্থাপিত হাইব্রিড নেট-মিটারিং সোলার প্যানেল পরিদর্শন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ম সচিব ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জি.ম মিজানুর রহমান, সুজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বদরুল ইসলাম সহ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ, অধ্যক্ষ ও শিক্ষকমন্ডলী ।
পরিদর্শনে যুগ্ন সচিব মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং বলেন, এই নেট মিটার স্থাপনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীডে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ যুক্ত হবে, এজন্য বিদ্যুৎ জ্বালানী সাশ্রয়ে অনেক প্রভাব পেলবে। তাছাড়া অব্যবহৃত বিদ্যুৎ মাদ্রাসার নামে ক্রেডিট হয়ে থাকবে। তা বছর শেষে ডেবিট-ক্রেডিট বিবেচনা করা হবে। তার সাথে তিনি সকল প্রতিষ্ঠানে এরকম নেট মিটার স্থাপনে উদ্যোগী করার জন্য ইউএনও কে অনুরোধ জানান। তিনি প্রিন্সিপালের কাছ থেকে সোলার প্যানেল স্থাপনের খরচ ও সুবিধা-অসুবিধার নোট নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মিটিং এ উদাহরন হিসেবে উপস্থাপন কারার জন্য বলেন। তিনি এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগীতা করবেন বলে আশ্বাশ প্রদান করেন।শেষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে এ সাহসী উদ্যাগের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জি.এম মিজানুর রহমান বলনে, বর্তমান এবং ভবিষৎতের কথা ভেবে আমাদেরকে পর্যায়ক্রমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এবং বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মের কথা ভেবে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমানোর জন্য। এটা উভয় ক্ষেত্রে সুবিধা গ্রাহককের ক্ষেত্রেও সুবিধা এবং সরকারের জ্বালানী সাশ্রয়ে আমরা জাতিগত ভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ক্ষেত্রে অধিক পরিমান ঝুঁকি, বেশি ব্যবহার করি তাহলে সরকারিভাবে জ্বালানী সাশ্রয় হবে এবং এটা জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে। এই মাদ্রাসার সোলার প্যানেল পরিদর্শন করে দেখলাম এটা ১৫ কিলোওয়াটের নেয়া হয়েছে এখানে সর্বোচ্চ ১২ কিলোওয়াট ব্যবহার করা হবে। গত মাসে দেখা গেছে, সারা মাস ব্যবহার করার পরও প্রায় সাড়ে ৩০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত আছে। যেটা মাদ্রাসার নামে ক্রেডিট হয়ে আছে। এটাকে নেট মিটারিং বলা হয়। বিদ্যুৎ মাদ্রাসায় ব্যবহার কারার পরে সেটা অতিরিক্ত থাকার সেটা মাদ্রাসার নামে ক্রেডিট হিসেবে যুক্ত থাকবে। যখন কোন সময় আবহাওয়ার কারণে সোলার প্যানেল বন্ধ থাকবে তখন জাতীয় গ্রীড থেকে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে যত ইউনিট এখান থেকে সমন্বয় করা হবে। সোলার মিটার স্থাপনে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, মাদ্রাসা থেকে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়। যা ৬ বছরে মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা উটে আসবে, এবং এই সোলার প্যানেলের বয়স যখন ১৫/২০ বছর হবে তখন দেখা যাবে মাদ্রাসা ৭/৮ বছর বিনা খরছে এখান থেকে বিদ্যুৎ সেবা পেয়েছে। তিনি সকল গ্রাহককে এই বিষয়ে উৎসাহিত হওয়ার জন্য আহ্বান করেন। আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে এই মুহূর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কোন বিকল্প নেই।
উল্লেখ্য, গত (৮ অক্টোবর) মাদরাসার ভবনের ছাদে স্থাপিত সৌর বিদ্যুৎ থেকে দিনের বেলায় মাদরাসার প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, তা নেট মিটারের মাধ্যমে সরকারি লাইন জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হবে। মাদরাসা যেদিন বন্ধ থাকবে, সেদিনের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে চলে যাবে। আবার রাতের বেলা এবং দিনে যখন সূর্যের আলো থাকবে না, তখন জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের মাধ্যমে মাদরাসার সব কার্যক্রম চলবে।