দেশ ছেড়ে দলে দলে পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২২:২৭ অপরাহ্ন
ইসরায়েলের আয়রন ডোমের দুর্বলতা জেনে গেছে ইরান?
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দখলদার ইসরায়েল ধীরে ধীরে নিজের সীমানা বাড়াচ্ছে। বিদেশের মাটি থেকে ইহুদিদের উড়িয়ে এনে সেই অবৈধ জায়গায় গড়ে দিচ্ছে বসতি। তবে এত কিছু করেও ইসরায়েলিদের মন পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন এক পরিসংখ্যান বলছে, দলে দলে ইসরায়েল ছাড়ছে দেশটির নাগরিকরা।
রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভের পর থেকেই একের পর এক সংঘাতে জড়িয়েছে ইসরায়েল। এখন নতুন করে গাজার পাশাপাশি লেবাননেও ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। এমতাবস্থায় ইসরায়েল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গেছে। বলা হচ্ছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর চলতি বছর ইসরায়েল ছাড়ার প্রবণতা বেড়েছে তিন গুণ।
ইসরায়েলের মারিভ পত্রিকার বরাতে মিডল ইস্ট মনিটর জানায়, এ বছরের প্রথম সাত মাসেই দেশ ছেড়েছে ৪০ হাজার ইসরায়েলি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে গেল বছর দেশ ছাড়ার এই পরিমাণ ছিল মাসে দুই হাজারের বেশি। এমনকি অন্য দেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার হারও বেড়েছে ইসরায়েলে।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ইসরায়েলি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এছাড়া আরও অনেক ইসরায়েলি দেশ ছাড়ার জন্য সুযোগ খুঁজছে। কান্তার ইনসাইটস এবং কান পাবলিক ব্রডকাস্টারের একটি জরিপের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
সংস্থাটির গত সপ্তাহে পরিচালিত জরিপ অনুসারে, অনেকে বলেছেন তারা ইতিমধ্যে চলে গেছেন। জরিপে অংশ নেওয়া ২৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন- তারা ইসরায়েল ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। ৯ শতাংশ ইসরায়েলি বলেছেন- তারা দেশ ছাড়বেন কিনা জানেন না।
মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ১০ লাখ ইসরায়েলি বিদেশি পাসপোর্ট নিয়েছে। সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে যেন তড়িঘড়ি নতুন ঠিকানায় চলে যাওয়া যায়, তাই এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। এছাড়া চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বিদেশে ৭০০ কোটি ডলার ট্রান্সফার করেছে ইসরায়েলিরা।
ইসরায়েলি পত্রিকার ভাষায়, এটা ব্রেন ড্রেন অর্থাৎ মেধাবিরা ইসরায়েল ছাড়ছে। কেননা, দেশ ছাড়ার এই তালিকায় ডাক্তার, বিজ্ঞানী, ফার্মাসিস্ট ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন। তারা বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি ও নিরাপদ জীবনের আশায় ইসরায়েল ছাড়ছেন।
ইসরায়েলের আয়রন ডোমের দুর্বলতা জেনে গেছে ইরান?
ইহুদিবাদী ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র অভিযানের দিকে ইঙ্গিত করে ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি টেলিগ্রাফ লিখেছে, ইসলামি এ দেশটির পরবর্তী পদক্ষেপ হতে পারে আরও অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইরান সম্ভবত ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমের দুর্বলতাগুলো জেনে গেছে।
টেলিগ্রাফ লিখেছে, ইরানের ‘ট্রু প্রমিজ-২’ শীর্ষক অভিযান প্রমাণ করেছে যে, দেশটি ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটাতে সক্ষম।
দৈনিকটি আরও লিখেছে, বিশেষজ্ঞরা এটা বোঝার চেষ্টা করছেন যে, পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ তীব্রতর হলে ইসরায়েল ইরানের আরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জোয়ার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে কি?
বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে টেলিগ্রাফ আরও লিখেছে, ভিডিও চিত্র থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে যে, ইসরায়েল সম্ভবত একই সময়ে ইরানের বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা ঠেকানোর মতো যথেষ্ট সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী সিস্টেমের অধিকারী নয়।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ ভয় রয়েছে যে, বিশেষ করে ইরানের ড্রোন হামলাগুলো ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমের ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটিয়ে এতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বা এই ব্যবস্থা ওলট-পালট করে দিয়েছে অথবা এইসব সিস্টেমের দুর্বলতার দিকগুলো ইরান জেনে গেছে।
ব্রিটেনের এই দৈনিক লিখেছে, ইরান তার মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের বিশাল হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের আকাশ-প্রতিরক্ষা সিস্টেমগুলোকে অকার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে এবং ইসরায়েলের ভূমিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পেরেছে।




