‘আমাকে ডিজিএফআই দিয়ে তুলে নিয়ে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই নেয়’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ আগস্ট ২০২৪, ৩:৫১:৩১ অপরাহ্ন
‘আমি এখন কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছি’
ব্যাংকিং খাতে দখলদারত্ব উচ্ছেদ শীর্ষক ওয়েবিনারে কথা বলেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান। আজ শুক্রবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। ছবি: সংগৃহীত
অনুপম নিউজ ডেস্ক: ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নানকে বাসা থেকে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ভোরে তুলে নেয় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কয়েকজন কর্মকর্তা।
এ ছাড়া একইভাবে নিজ নিজ বাসা থেকে তুলে নেওয়া হয় ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে। পরে কচুক্ষেতে ডিজিএফআই কার্যালয়ে নিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে ব্যাংকটি দখলে নেয় মোহাম্মদ সাইফুল আলমের মালিকানাধীন এস আলম গ্রুপ।
ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজনে ব্যাংকিং খাতে দখলদারত্ব উচ্ছেদ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারের সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার।
ওয়েবিনারে ব্যাংকটির সাবেক এমডি আবদুল মান্নান বলেন, ওই দিন ইসলামী ব্যাংকের একটি অব্যবহৃত প্যাডে লেখা পদত্যাগপত্রে জোর করে সই নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমাকে যে কাগজে সই করানো হয়, সেটি ইসলামী ব্যাংকের একটি প্যাড। কিন্তু সেই প্যাড ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক কখনই ব্যবহার করেনি। সে ধরনের একটি প্যাডে আমার পদত্যাগপত্র নেওয়া হয়েছে।’
আবদুল মান্নান বলেন, ওই দিন (৫ জানুয়ারি, ২০১৭) অনেক রাত পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের স্যাররা অফিস করেছেন। তারা ওই দিনই ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করতে কাজ করেছেন। এগুলো কীভাবে হতে পারে একটি দেশের ব্যাংক খাতে। যে ব্যাংক খাত একটি দেশের অর্থনীতির প্রাণ।
তিনি আরও বলেন, পরের কয়েক বছর তাদের টেলিফোনে (এস আলম গ্রুপ) বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অনেক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, যাতে ভবিষ্যতে এমনটা ঘটানোর কেউ সাহস না পায়।
দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর দেশে ফিরেছেন জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘বিদেশে থাকার সময় দেশ থেকে সাংবাদিকদের কেউ কেউ যোগাযোগ করলেও আমি কথা বলিনি। কারণ, আমি নিরাপদ বোধ করিনি। আতঙ্কের মধ্যে থেকেছি। আবার বাংলাদেশে এসে নিশ্বাস নিতে পারব বলে মনে করিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখন মনে করি, কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছি। তবে সেই ভয় কাটতে বোধ হয় সময় লাগবে। মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে বোধ হয় আমার আরও সময় লাগবে।’