মাউশির পরিচালকদের পদত্যাগের দাবিতে আলটিমেটাম
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৮:২৮ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: আজকের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাউশির পরিচালকদের পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর শিক্ষা ভবনে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। দলীয় পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণির শিক্ষক-কর্মচারীরা পদোন্নতিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন।
এতে বঞ্চিত হয়েছেন সৎ ও যোগ্য শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই তারা এ বৈষম্যের প্রতিবাদ করে আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক পদত্যাগ করলেও দপ্তরটির দুর্নীতিবাজ অন্য পরিচালক ও সহকারী পরিচালকরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে অধিদপ্তরের সুবিধাবঞ্চিতরা।
গত বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের উইং প্রধান দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট। শিক্ষা ভবনে ঘেরাও কর্মসূচি থেকে এই আলটিমেটাম ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুঁইয়া।
মঙ্গলবারের মধ্যে এসব কর্মকর্তা পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই ঠিকঠাক অফিসে আসেন না। আবার কেউ কেউ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বের হয়ে পড়েন। এ নিয়ে শিক্ষা ভবনে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ছাত্র জনতা গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষা ভবনে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের আলটিমেটামের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ পদত্যাগ করেন।
গত ৪ আগস্ট সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলের বাসায় হামলার প্রতিবাদে মিছিল ও স্লোগান দেন শিক্ষা ক্যাডারের কতিপয় কর্মকর্তা। এই মিছিলের আয়োজন করেন মাউশির চুক্তিভিত্তিক ওই কর্মকর্তা। এসব কিছুর ইন্ধন দেন কলেজ ও প্রশাসন শাখা, পরিকল্পনা শাখা, প্রশিক্ষণ শাখার পরিচালকরা।
এতে সংগঠিত করা ও অর্থায়নের দায়িত্বে ছিলেন মাধ্যমিক শাখার পরিচালক সৈয়দ জাফর আলী, প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী পরিচালক তানভীর হাসান, শারীরিক শিক্ষা উপপরিচালক মুহম্মদ মনিরুল হক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা আধিদপ্তর থেকে নানা অনিয়মের দায়ে বদলি হওয়া ২৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা ড. এনামুল হক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাদের নেতৃত্বে একটি মিটিং হয় এবং সেখানে এনামুক হক খাবারের আয়োজন করে। ডিআইএ ও মাউশির ৩০ জনের এ মিছিল হয়। যারা সবাই গত সরকারের ১৫ বছরে শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। এখন তারা ভোল পাল্টানো শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) মহাপরিচালক নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) পদে কর্মরত এবিএম রেজাউল করীমকে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জানার জন্য ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট সভাপতি অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুইয়া বলেন, আমরা গত বুধবারের মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছিলাম; কিন্তু মাউশি ডিজি পদত্যাগ করলেও আওয়ামী সরকারের আমলে সুবিধাভোগী মাউশির বিভিন্ন উইং পরিচালকসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেনি। পদত্যাগ না করায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা বৃহস্পতিবার শিক্ষা ভবন ঘেরাও করেছি।
মঙ্গলবার এসব অভিযুক্ত কর্মকর্তারা পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি বাতিল করতে হবে; কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদে পোস্ট অফিসাররা শুধু সভাপতিকে বাতিল করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি বাতিল করতে হবে।