শিক্ষাবিদ আকরাম আলী স্মারক সংকলন ‘অন্তরঙ্গ মুখচ্ছবি’র প্রকাশনা সম্পন্ন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০২৪, ৯:০৫:৩৪ অপরাহ্ন
সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ সম্পাদিত মো. আকরাম আলী স্মারক সংকলন ‘অন্তরঙ্গ মুখচ্ছবি’র প্রকাশনা অনুষ্ঠান গতকাল ১৫ জুলাই সোমবার বিকাল পাঁচটায় সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সাহাবউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেল ডক্টর জহিরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সরকারি মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মাহবুবুর রহমান। মুরারিচাঁদ কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আহমদ হোসেন। সদর উপজেলা পরিষদ সিলেটের চেয়ারম্যান সুজাত আলী রফিক। কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজির উদ্দিন।
এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক-অনুবাদক মিহিরকান্তি চৌধুরী। প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক গ. ক. ম. আলমগীর। সিলেট জেলা বারের সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ডক্টর জফির সেতু। তৈয়বুন্নেছা খানম কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অরুনচন্দ্র দাস। লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ডক্টর মোস্তাক আহমাদ দীন। মদনমোহন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান আসমা উল হোসনা। মদন মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান হোসনে আরা কামালী।
মো. আকরাম আলীকে নিবেদিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ও গবেষক এ কে শেরাম, কবি হেলাল চৌধুরী. কবি ও বিজ্ঞান লেখক মাধব রায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক লেখক হিমাংশুরঞ্জন দাস এবং কবি প্রণবকান্তি দেব।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মদনমোহন কলেজের আইসিটি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আকরাম আলীর তনয় আলী হাসান পারভেজ এবং অধ্যাপক আকরাম আলী জন্মস্থান শেখপাড়া গ্রামাবসীর পক্ষে গিয়াস উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মুরারিচাঁদ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. তোতিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে অতিথি ও বক্তাবৃন্দ অধ্যাপক আকরাম আলী শিক্ষকতা জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলেচনা করেন। মো. আকরাম আলীকে নিবেদিত গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। গানের রচয়িতা নাট্যকার সুফি সুফিয়ান। সুর করেছেন অনিমেষ বিজয় চৌধুরী এবং গেয়েছেন পল্লবী দাস মৌ। প্রভাষক উজ্জল দাসের সঞ্চালনায় একজন শিক্ষাবিদের জীবন ও কর্মের দীর্ঘ আলোচনা সত্যিই প্রশংসনীয়।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক মো. আকরাম আলী ছিলেন একজন সমাজহিতৈষী আদর্শ শিক্ষক। আপাদমস্তক প্রগতিশীল, খাঁটি অসাপ্রদায়িক নিপাট এক ভদ্রলোক। তিনি শুধু এক ব্যক্তির নাম নয়, যুগপৎ একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। তার অবদানে, প্রজ্ঞায়, জ্ঞানে, মনীষায়, ব্যক্তিত্বে, নৈর্বক্তিক ব্যক্তিগত ও সমাজ-আচরণের বহুমাত্রিকতায় তাঁর মধ্যে ছিল ব্যক্তির বাইরে প্রতিষ্ঠানের এক অভিনব প্রকাশ।
অধ্যাপক মো. আকরাম আলী সিলেটের সমাজ ও শিক্ষাজগতের এক উজ্জ্বল নাম। ১৯৭৩ থেকে ২০০২ পর্যন্ত দীর্ঘ পথপরিক্রমায় সিলেটের মদনমোহন কলেজে সহকারী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপকসহ নানা পদে বৃত হয়ে অবসরে যান। তাঁর ছাত্রজীবনের বিদ্যায়তনিক উজ্জ্বলতা পরবর্তীকালে তাঁর পেশাগত জীবনকেও প্রভাবিত করেছিল। ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন যথাক্রমে ১৯৬৩ ও ১৯৬৪ সালে। ১৯৬৫ সালে সুনামগঞ্জ কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সালে সেখান থেকে পদত্যাগ করে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহন কলেজে যোগদান করেন। এখান থেকেই অবসরে যান ২০০২ সালে।
আলোর দিশারি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন অধ্যাপক মো. আকরাম আলী। বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত ছিলেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, তিনি ছিলেন শাহ খুররম কলেজে ও দক্ষিণ বিশ্বনাথ আমজদ উল্লাহ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। নিজ ভূমিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
মো. আকরাম আলী স্মারক সংকলান ‘অন্তরঙ্গ মুখচ্ছবি’ গ্রন্থে ৬০ জন প্রাবন্ধিক তাঁর জীবন ও কর্মের ওপর প্রবন্ধ লিখেছেন। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে আকরাম আলী স্মৃতি পর্ষদ । প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রব এষ।—বিজ্ঞপ্তি