বীর মুক্তিযোদ্ধা আমান উদ্দিন স্মরণে সভা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৫০:৩১ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস: বীর মুক্তিযোদ্ধা আমান উদ্দিন স্মরণে সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিল স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ। গত ৯ জুলাই মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম খানের সভাপতিত্বে এবং সাবেক ছাত্র নেতা শফিক উদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা।
বক্তারা বলেন, আমান উদ্দিন ছিলেন একজন মানবহিতৈষী খাঁটি দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা।একজন রাজনৈতিক দার্শনিক। যিনি সারা জীবন খেটে খাওয়া মানুষ, নিপীড়িত জনগণের পক্ষে কাজ করে গেছেন। তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। তিনি সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার সাহসী মানুষ ছিলেন। বর্তমান রাজনীতির প্রতি তাঁর অনীহা ছিল কারণ দেশে যে দুর্বৃত্তায়ন চলছে। দুর্নীতি কিছু মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। যার কারণে তৈরী হচ্ছে বেনজীর, মতিউর, গাড়ির ড্রাইভার আবেদ আলী, প্রিয়নাথ, কামরুল, আজিজদের মতো লোক। এদেরকে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় না আনলে সমাজ আরও বেশি কলুষিত হবে। এর জন্য মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়নি। আমান উদ্দিনের মতো দেশ প্রেমিকরাও তো জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছিল। দেশ স্বাধীন করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে। আজও সেই স্বাধীনতা আসেনি। আজও অর্থনৈতিক মুক্তি, সাংস্কৃতিক সামাজিক মুক্তির জন্য লড়াই করতে হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের সাথে। দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল সুদখোর, ঘুষখোর, চোরবাটপার, সৃষ্টির জন্য নয়। একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে।একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্টার জন্য মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দামাল সন্তানরা।
আমান উদ্দিন ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা মানুষ। স্বাধীনতাকামী নীতিপরায়ণ খাঁটি দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা। তিনি ব্যক্তির চেয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য দিনরাত কাজ করে গেছেন। অত্যন্ত সহজ সরল নিবেদিত স্বভাবের অধিকারী ছিলেন। সফল একজন পিতা ছিলেন। তিন ছেলে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। তিনি বিশিষ্ট বাম রাজনীতির পুরোধা বরুণ রায়ের শিষ্য ও মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী। লন্ডনের প্রতিটি অলি-গলিতে তাঁর পদচারণা ছিল। প্রতিটি মিটিং মিছিলে সর্বদা তাঁর উপস্থিতি ছিল। দেশ নিয়ে, জাতি নিয়ে সবসময়ই তাঁর চিন্তা চেতনায় আমৃত্যু ছিল। দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ ছিল—এর জন্য তো দেশ স্বাধীন করা হয়নি। শোষণ মুক্ত সমাজ বিনির্মানের মুক্তিযুদ্ধেঅংশ গ্রহণ করেছিলেন।
স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাবেক ছাত্রনেতা, জিয়া উদ্দিন লালা, সাবেক প্রেস মিনিস্টার বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু মুসা হাসান, যুক্তরাজ্য জাসদের সভাপতি হারুনুর রশিদ, সহ সভাপতি মুজিবুল হক মনি, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবুল মনসুর লীলু, অর্থ সম্পাদক রেদোয়ান খান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান শানুর, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা লবীব আহমেদ, আশরাফুজ্জামান সানি, বিশিষ্ট সাংবাদিক ডা: গিয়াস উদ্দিন, বাসদ নেতা গয়াছুর রহমান, সাবেক কাউন্সিলার আহবাব হোসেন।মাহমুদুর রহমান মান্না শামসুদ্দিন, আব্দুস সাত্তার, শেখ দবির মিয়া, নুরুল ইসলাম, মামুন আহমদ, মৌলানা আব্দুল কুদ্দুস, দোয়া পরিচালনা করেন হাফিজ জিলুখান।
উল্লেখ্য, তিনি গত ৩রা জুন সিলেটের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৮০ বছর। তিন ছেলে সহ বহু আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা রেখে গেছেন। তিনি গোলাপগন্জ উপজেলার বুধবারী বাজার ইউনিয়নের চন্দরপুর বানীগাজী গ্রামের কৃতি সন্তান ছিলেন। তিনি একজন রণাঙ্গনের সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর এক ছেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। আরেক ছেলে নেভীতে ইন্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। আরেক ছেলে ইংল্যান্ড প্রবাসী সিলেট নাগরীর গবেষক।