শরিফগঞ্জ ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে তামিম ইয়াহইয়ার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৬:৩৩ অপরাহ্ন
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরিফগঞ্জ ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকাল ৪টায় ইউনিয়নের মেহেরপুর বাজারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
শরিফগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সামছুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক দলের দপ্তর সম্পাদক সুহেল আহমদের সঞ্চালনায় বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম সাইফুর রহমান, গোলাপগঞ্জ পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী, ৬নং ওয়ার্ড কৃষক দল সভাপতি নিজাম উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সদস্য রোহেল আহমদ রানা, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা অনিক আহমদ সেবুল, গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা নাফি কবির প্রমুখ।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তামিম ইয়াহয়া বলেন, দেশের চলমান এই অবস্থার জন্য বর্তমান সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়নই দায়ী। আমরা এর আগেও টানা বৃষ্টি হতে দেখেছি। কিন্তু এমন ভয়াবহ বন্যা কখনো দেখিনি। বৃষ্টি আল্লাহর পক্ষ থেকে হলেও বন্যা ছিল মানবসৃষ্ট। ২০২২ এর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যাও ছিল ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের কর্মের কুফল। এখনকার বন্যার কারণও ওই একটাই। ভারতে বৃষ্টিপাত হলে বা বন্যা দেখা দিলে ভারত নিজেকে অভিশাপমুক্ত করতে বাংলাদেশের সাথে সংযুক্ত স্লুইচগেটগুলো খুলে দেয়। যেমনটি খোলা হয়েছিল ২০২২ সালে।
এবারও একই কায়দায় নিজেকে রক্ষা করেছে ভারত। সিকিমে যখন বৃষ্টিপাত শুরু হল। বন্যা দেখা দিল। ভারত তখন ঠান্ডা মাথায় স্লুইচগেটগুলো খুলে দিল। সেখান থেকে নেমে আসা পানিতে আমাদের নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হলো। কতো মানুষ ও গবাদি পশু বন্যার কবলে মারা গেলো। কত মানুষ পানিবন্দি হয়ে না খেয়ে দিন পার করল। অথচ, এসব বিষয় নিয়ে আমাদের সরকারের কোনো মাথা ব্যথা নেই। মিডিয়ায় স্লুইচগেট খোলার খবরগুলো ফলাও হচ্ছে। তা দেখার পরও সরকার বার বার ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র বলে আখ্যায়িত করছে। নিজের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতকে সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। ভারতের দেওয়া পানিতে যখন আমার সিলেট নিমজ্জিত, তখনই সরকার বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারতকে ট্রেন চালানোর অনুমতি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অপরিকল্পিতভাবে হাওরের বুকে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণ করেছে। যার খেসারত দিচ্ছে সিলেটের মানুষ। এই সড়কের কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সিলেট অঞ্চলে পানি আটকে বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সিলেটকে বাঁচাতে সরকারকে দ্রুত মিঠামইন সড়ক নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। পানি নিষ্কাশনের যথেষ্ট পথ সৃষ্টি করতে হবে। নয়তো সিলেটের মানুষকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তামিম ইয়াহয়া বলেন, এই ডামি সরকার ২০০৯ সাল থেকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে। আর জনগণের সাথে উন্নয়নের নামে ফাইজলামি করছে। ৬ লাখ মানুষ যখন বন্যায় প্লাবিত, তখন ৬০ লাখ টাকা বন্যা সহয়তা? মানে জনপ্রতি ১০ টাকা, এটা ফাইজলামি ছাড়া আর কী? কোথায় উনাদের ইমারজেন্সি ফান্ড? কোথায় জরুরি নদী খনন প্রকল্প? খাল উদ্ধারের পরিবর্তে খাল ভরাট করে দখল করা হচ্ছে। বেড়ি বাঁধ তৈরির নামে প্রকল্প পাশ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আর এসবকে বলা হচ্ছে উন্নয়ন।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদী পরিবারের সদস্য। তারেক সাহেব আমাদেরকে পাঠিয়েছেন। উনি ২৯ অক্টোবর আমাদেরকে বলেছিলেন গণতন্ত্রের জন্য রাজপতে আন্দোলন করতে। আমরা উনার কথা শুনে রাজপথে থেকে চাপাতি, রামদার কোপ খেয়েছি, রক্ত ঝরিয়েছি, বনে জঙ্গলে রাত্রি যাপন করেছি, জেলও খেটেছি। সব আপনাদের জন্য। আর এখন উনি পাঠিয়েছেন আপনাদের খোঁজ-খবর নিতে, কাধে কাধ মিলাতে। আজকের এই ত্রাণ সামগ্রী উনার পক্ষ থেকে, আমার দলের পক্ষ থেকে। আমাদের ত্রাণ বিতরণের কাজ অব্যাহত থাকবে।
বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের জন্য জরুরি স্পট খোলা হয়েছে জানিয়ে তামিম বলেন, আমরা ইমারজেন্সি স্পটগুলো আইডেনটিফাই করে ধিরে ধিরে ২০০০+ প্যাকেট বন্টন করবো। বিগত কোরবানির ঈদের ১২০০+ মানুষকে ১ কেজি করে গোসত দেওয়া হয়েছে। এর আগে রামাদানে ইফতারের জন্য ২০৫৭ প্যাকেট বন্টন হয়েছে। ২০২২ সালের বন্যায় আমাদের থেকে বন্যা সহায়তা কেউ বেশি করেনি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে সম্পৃক্ত। সাধারণ মানুষের ডাল-ভাত নাগালের মধ্যে আনার আন্দোলনে সম্পৃক্ত।—বিজ্ঞপ্তি