সোশ্যাল মিডিয়া অন্যকে লজ্জা দেওয়ার জায়গায় পরিণত করবেন না: রাজা সুলতান ইব্রাহিম

আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া: মালয়েশিয়ার রাজা মহামান্য সুলতান ইব্রাহিম বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে তর্কের জায়গায় পরিণত করবেন না এবং অন্যদের লজ্জা দেবেন না কারণ এই কাজগুলি কেবল বিভাজন এবং সংঘাত সৃষ্টি করে। রাজা চরমপন্থার বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছেন, বিশেষ করে জাতি ও ধর্ম সম্পর্কিত বিষয়ে।

রবিবার (৭ জুলাই) পুত্রজায়া ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পর্যায়ের আরবী নববর্ষ মাল হিজরা ২০২৪/১৪৪৬ হিজরী উদযাপন অনুষ্টানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। সুলতান ইব্রাহিম বলেন, “অন্যকে লজ্জা দিবেন না বা লজ্জাজনক বিষয়বস্তু ভাইরাল করবেন না, কারণ এটি শুধুমাত্র বিভাজন এবং সংঘর্ষের কারণ হবে।”

আরবী নববর্ষ উদযাপন অনুষ্টানে মালয়েশিয়ার রাণী মহারাজ জারিথ সোফিয়াও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম এবং তার স্ত্রী, দাতুক সেরি ডক্টর ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মন্ত্রী (ধর্ম বিষয়ক) দাতুক ডক্টর মোহাম্মদ নাইম মোখতার।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তথ্যের অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহের মধ্যে আজ জনসাধারণের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলিকে রাজা স্বীকার করেছেন, যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।

তাই, মহামান্য মালয়েশিয়ানদের সামাজিক মিডিয়াতে ধর্মীয় জ্ঞান খোঁজার সময় সতর্কতা অবলম্বন করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন, নিশ্চিত করেছেন যে প্রাপ্ত বিষয়বস্তু খাঁটি এবং প্রামাণিক উত্স থেকে।

সুলতান ইব্রাহিম বলেছেন, ইসলাম সম্পর্কিত বিভ্রান্তিকর, ভুল এবং ভুল ব্যাখ্যামূলক তথ্যের প্রচারের পাশাপাশি প্রকৃত ইসলামী নীতি থেকে বিচ্যুত শিক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

“অতীতে, ধর্মীয় শিক্ষা প্রাথমিকভাবে বই পড়া এবং মসজিদে ‘কুলিয়া’ (ধর্মীয় ক্লাস) যোগদানের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, আজ, সমাজ ক্রমবর্ধমানভাবে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য ‘উস্তাজাহ ফেসবুক’ এবং ‘উস্তাজাহ টিকটক’-এর মতো অনলাইন উত্সের দিকে ঝুঁকছে।

রাজা মুসলমানদেরকে সঠিক এবং ভুলের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার অনুশীলন করার জন্য স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, জোর দিয়েছেন যে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে ভুল ধর্মীয় তথ্যের বিস্তার বিভ্রান্তি, বিভাজন এবং খাঁটি ধর্মীয় অনুশীলন থেকে বিচ্যুতি ঘটাতে পারে।

মহামান্য সরকারকে বিচ্যুতিপূর্ণ বিষয়বস্তুর বিরুদ্ধে প্রয়োগমূলক ব্যবস্থা বাড়ানোর এবং সঠিক জ্ঞান ও তথ্য প্রচারের জন্য একটি ধর্মীয় রেফারেন্স সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানান।

এদিকে, জাতি গঠনের দিক থেকে, সুলতান ইব্রাহিম বলেছেন, হিজরাহ উম্মাহ এবং সম্প্রদায়কে একত্রিত করতে কাজ করে। সুলতান ইব্রাহিম দেশের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ ভবিষ্যত প্রজন্ম গঠনে ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে শক্তিশালী করতে মালয়েশিয়ান বিশেষ করে মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান।

“আমাদের দেশে প্রচলিত ইসলাম আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাহর শিক্ষার উপর ভিত্তি করে। রাজা বলেন, আমি বিভিন্ন ইসলামিক বিশ্বাস ও শিক্ষার প্রসার লক্ষ্য করেছি, একটি ‘রোজক’ (মিশ্র) পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এটি শুধুমাত্র মুসলমানদের বিভক্ত করার জন্য কাজ করে। .

“আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চালিত শিক্ষার দ্বারা বিভ্রান্ত করা উচিত নয়। এই প্রবণতা চলতে থাকলে, কিভাবে মুসলমানরা একত্রিত হতে পারে? দয়া করে এটি সাবধানে চিন্তা করুন। মহামহিম বলেছেন, আমি আপনাকে শুধু মনে করিয়ে দিতে পারি; পছন্দটি আপনার।

এই বছরের মাল হিজরা উদযাপনের সাথে মিলিত হয়ে, সুলতান ইব্রাহিম সমস্ত মুসলমানদেরকে কুরআনের বিপরীত খারাপ অভ্যাস এবং অভ্যাসগুলি ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

থিমযুক্ত “আল-ফালাহ পেমাকু মাদানী মালয়েশিয়া”, এই বছরের জাতীয় পর্যায়ের মাল হিজরাহ উদযাপনে ৬,০০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন।