বিশ্বনাথ উপজেলায় নির্বাচিত ৩ জন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ মে ২০২৪, ১১:০৫:২০ অপরাহ্ন
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: সিলেটের বিশ্বনাথের চেয়ারম্যান বিজয়ের খবর এসেছে রাত ১২ টার পর। এ উপজেলার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তী।
ঘোষিত ফলাফলে বিশ্বনাথ উপজেলায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৩২২ ভোট। তাঁর নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ আনারস প্রতীকে ১২ হাজার ৯৬৮টি ভোট পেয়েছেন।
জানা গেছে, রাত ৯টার ভেতরেই উপজেলার ৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৫টির ফলাফল মিলে যায়। কিন্তু এসময় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে খাজাঞ্চি ইউনিয়নের নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. বিল্লাহ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেন।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন- নোয়ারাই কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে প্রিজাইডিং অফিসার তড়িঘড়ি করে ফলাফলের কাগজ কোনো এজেন্টের স্বাক্ষর না নিয়ে চলে আসেন। কিন্তু রাত ৯টা পর্যন্তও তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় না পৌঁছালে কর্মকর্তা তাকে পুলিশ পাঠিয়ে নিজ বাসা থেকে ডেকে আনেন। আসার পর তিনি নোয়ারাই কেন্দ্রের রিজাল্ট শিট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে দিলে দেখা যায়- এতে কোনো এজেন্টের স্বাক্ষর নেই।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, কাগজে ভোটের সংখ্যা এবং গণনা শেষে কেন্দ্রে ঘোষণার সংখ্যার মধ্যে তারতম্য রয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয়ে তিনি সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে সমাধানের জন্য আলোচনা করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী লড়াই করেছেন। তারা হলেন- যুক্তরাজ্যের ডরসেট আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবাসী আব্দুল রোশন চেরাগ আলী (ঘোড়া), উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী (কাপ পিরিচ), উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী গৌছ খান (কই মাছ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী আকদ্দুছ আলী (হেলিকপ্টার), যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও বিশ্বনাথ স্পোটর্স ডেভোলাপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের যুগ্ম সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. সেবুল মিয়া (দোয়াত-কলম), যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবলীগের সহসভাপতি প্রবাসী শমসাদুর রহমান রাহিন (শালিক), যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ এস. আলী এনামুল হক চৌধুরী (মোটর সাইকেল), জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (আনারস), যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন (উট) এবং বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (টেলিফোন)।
চেয়ারম্যান পদের অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে ‘দোয়াত-কলম’ প্রতীকে যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিস্কৃত) প্রবাসী সেবুল মিয়া পেয়েছেন ১১ হাজার ৬৯৯ ভোট, ‘টেলিফোন’ প্রতীকে পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন পেয়েছেন ৮ হাজার ৭০৩ ভোট, ‘কৈ মাছ’ প্রতীকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক (বহিস্কৃত) প্রবাসী গৌছ খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৮৮ ভোট, ‘শালিক’ প্রতীকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবলীগের সহ সভাপতি প্রবাসী শমসাদুর রহমান রাহিন পেয়েছেন ২ হাজার ১৫০ ভোট, ‘ঘোড়া’ প্রতীকে বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুক্তরাজ্যের ডরসেট আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবাসী আব্দুল রোশন চেরাগ আলী পেয়েছেন ১ হাজার ৬৪৪ ভোট, ‘মোটর সাইলেক’ প্রতীকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ এস আলী এনামুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৯৪১ ভোট, ‘উট’ প্রতীকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন পেয়েছেন ৫১৮ ভোট, ‘হেলিকপ্টার’ প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি প্রবাসী আকদ্দুছ আলী পেয়েছেন ৪০৩ ভোট।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ‘কলস’ প্রতীকে ২৩ হাজার ৬৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার করিমা বেগম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ‘ফুটবল’ প্রতীকে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলিয়া বেগম পেয়েছেন ১৮ হাজার ১৫৬ ভোট এবং অপর প্রার্থী ‘প্রজাপতি’ প্রতীকে উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক (বহিস্কৃত) বেগম স্বপ্না শাহীন পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৪২ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ‘মাইক’ প্রতীকে ১৬ হাজার ৯৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা যুবলীগ নেতা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মুহিবুর রহমান সুইট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ‘বই’ প্রতীকে উপজেলা আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ’র সদস্য ইসলাম উদ্দিন পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫১২ ভোট। অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে ‘চশমা’ প্রতীকে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিস্কৃত) আব্দুর রব সরকার পেয়েছেন ১১ হাজার ৪০ ভোট, ‘টিউবওয়েল’ প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ পেয়েছেন ৮ হাজার ৩০৫ ভোট, ‘তালা’ প্রতীকে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক (বহিস্কৃত) কাওছার খান পেয়েছেন ৪ হাজার ৩২৯ ভোট, ‘টিয়া পাখি’ প্রতীকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু পেয়েছেন ৩ হাজার ৭১৮ ভোট।