মিনিকেট হয়ে যাচ্ছে রাতের আঁধারে সরকারী চাল
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৯:৪১ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: অনেকদিন ধরে সরকারি চাল ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের বস্তায় খোলাবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে প্যাকেটজাত করে আসছে একটি চক্র বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলায়।
নকল পণ্য প্রতিরোধ কিংবা বাজারজাতকরণের ব্যাপারে আইন থাকলেও বড় কোনো শাস্তির নজির নেই বললেই চলে। চালবাজদের বিরুদ্ধে সর্বদাই নীরব ভূমিকা পালন করেন স্থানীয় প্রশাসন। সোমবার (১৫ই এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ড সংলগ্ন দক্ষিণ করুণা গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে আবদুল মন্নানের গোয়াল ঘরের মধ্যে বিভিন্ন দামি ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের বস্তায় প্যাকেটজাত করছিলেন সরকারি চাল। সেখানে ৫০ কেজি ওজনের ১৩৩টি বস্তা প্যাকেটজাত করা হয়।
এ বিষয়ে আবদুল মন্নান জানান, সরকারি চালগুলো তার মামাতো ভাই বেতাগী উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি শামীম আহম্মেদের। তবে এ বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ওই যুবলীগ নেতা। বিষয়টি বেতাগী উপজেলা প্রশাসনের নজরে আনলে, প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর মাত্র আট কিলোমিটার দূরত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান বেতাগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নানা নাটকীয়তার মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চালবাজদের সঙ্গে চলে এসিল্যান্ড বিপুল সিকদারের আলোচনা। পরে গভীর রাত হওয়ায় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে জানা যায়, ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে চালবাজদের ১৩৩ বস্তা চাল।
জব্দ করা হয়নি নকল ব্র্যান্ডিং করা কোনো চালের বস্তা কিংবা নকল প্যাকেটজাতকরণে ব্যবহৃত কোনো যন্ত্রপাতি। তবে সরকারি চাল ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডিং বস্তায় প্যাকেটজাত করার প্রক্রিয়ার সত্যতা পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে আসা ওই কর্মকর্তা। ঘটনাস্থলে বসে তিনি আরও জানান, ওই চাল কাবিটা ও কাবিখার।
একইসঙ্গে তিনি সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন- চাইলেই সব আইন সব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না তাই সহনশীলভাবে জরিমানা করা হয়েছে। এরপর তিনি ঘটনাস্থল থেকে ব্র্যান্ডিং বস্তা সেলাইয়ের কাজে ব্যবহৃত জব্দকৃত মালামাল ও ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের শতাধিক প্যাকেটসহ ১৩৩ বস্তা চাল ফেরত দিয়ে দেন। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন- বেতাগী উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রিগান হালদার এবং ভ্রাম্যমাণ অভিযানে আসা সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা মো. শামীম আহম্মেদ বলেন, এ সব চাল খাদ্যগুদম থেকে আমার ক্রয় করা। যার বৈধ কাগজপত্র আছে। সরকারি চাল ব্র্যান্ডিং প্যাকেট করা যায় কিনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এভাবেই করে আসছি। এসব ব্যাপারে থানা ও প্রশাসন জানেন। বেতাগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদার বলেন, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ করুণা গ্রামের এক বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের বস্তায় কাবিটার চাল বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্যাকেটজাত করায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৫০ ধারা অনুযায়ী এক ব্যক্তিকে বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে অভিযানে কোনো ধরনের মালামাল কিংবা প্রাপ্ত চাল জব্দ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।