পৃথিবীর গভীরে বিশাল মহাসমুদ্র, কিছু পাহাড় ছাড়া সব ডুবতে পারে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১২ এপ্রিল ২০২৪, ৬:৫৪:১২ অপরাহ্ন
অনুপম বিজ্ঞান ডেস্ক: পৃথিবীর উপরিভাগের নীচে আছে এক সুবিশাল সমুদ্র। কয়েক জন গবেষক দাবি করেছেন, ভূপৃষ্ঠের নীচে এক বিশাল মহাসমুদ্র রয়েছে। শুধু তাই নয়, নীলাভ পাথরের মধ্যে নাকি লুকিয়ে আছে এই সমুদ্র!
পৃথিবীতে এখন অন্যতম বড় সমস্যা পানির সঙ্কট। অনেকে দাবি করেন, যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয় তবে তা হবে পানির কারণেই। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রতি বছর কমপক্ষে এক মাস প্রবল পানির কষ্টে ভোগেন। এই সমুদ্রের পানি কতটা ব্যবহারযোগ্য, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।
এই সমুদ্রের আকার-আয়তন নিয়েও কৌতূহল দেখা দিয়েছে। গবেষকদের দাবি, বিশ্বের সব মহাসাগরের আয়তন যোগ করলে যা হয়, তার তিন গুণ আয়তন এই নতুন সমুদ্রের। রিংউডাইট নামে এক নীলাভ পাথরের মধ্যে নাকি রয়েছে এই সমুদ্র।
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা গবেষক স্টিভেন জ্যাকবসেন জানান, পৃথিবীর বেশির ভাগ পানি আসে ভূপৃষ্ঠের নীচ থেকেই। তিনি বলেন, ‘রিংউডাইট পাথরটি স্পঞ্জের মতো। এই পাথরের জলধারণ করার ক্ষমতা অনেক বেশি।’
রিংউডাইট পাথর কী ভাবে এত জল ধরে রাখতে পারে? বিজ্ঞানীদের কথায়, এই পাথরের গঠন খুবই অদ্ভুত। পাথরের যে কেলাসাকার গঠন রয়েছে তার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে পানি ধারণ ক্ষমতার রহস্য। কেলাসাকার গঠন হল পাথরের পরমাণুর বিন্যাস। এই বিন্যাসই হাইড্রোজেনকে আকর্ষণ করে। যার ফলে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখতে পারে রিংউডাইট পাথর।
গবেষকেরা কীভাবে এই পানি রাশির সন্ধান পেলেন? জানা গিয়েছে, এই গবেষণায় মোট দু’হাজারটি সিসমোগ্রাফ ব্যবহার করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। গোটা আমেরিকা জুড়ে এই সব সিসমোগ্রাফ ব্যবহার করা হয়েছে। সিসমোগ্রাফ যন্ত্রগুলির মাধ্যমে ৫০০টি ভূমিকম্পের তরঙ্গকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকেরা।
গবেষকদের দাবি, তরঙ্গগুলি পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ স্তরের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু জায়গায় তার গতি কমে যায়। কেন এই গতি শ্লথ হয়ে গেল, তার অনুসন্ধান শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। সেই অনুসন্ধান করতে গিয়েই পৃথিবীর গভীরে থাকা এই বিশাল পানি ভাণ্ডারের খোঁজ পান তাঁরা।
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দাবি, যে নতুন জলরাশির খোঁজ মিলেছে, তা যদি কোনও ভাবে ভূপৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে তবে পুরো বিশ্ব ভেসে যাবে। এভারেস্টসহ পৃথিবীর কয়েকটি পার্বত্য এলাকাই জলের উপরে থাকবে। বাকি সব তলিয়ে যাবে জলের নীচে।