বাংলাদেশির বিরুদ্ধে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ যুক্তরাজ্যে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ২:১৫:২৩ অপরাহ্ন
লন্ডন অফিস: স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাজ্যে এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হাবিবুর মাসুম, তার স্ত্রীর নাম শিউলী বেগম। গত শনিবার দুপুরে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ব্রাডফোর্ডে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ হাবিবুরের ভাইকে আটক করেছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানায়, ওই দিন বান্ধবী ও পাঁচ মাস বয়সী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হয়েছিলেন শিউলী। এ সময় হাবিবুর মাসুম একটি দোকানের সামনে শিউলীর ঘাড়ে ‘চার থেকে পাঁচবার’ ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। তবে শিশুটির কোনো ক্ষতি হয়নি।
দোকানের মালিক জিও খান (৬৯) বলেন, তিনি শিউলীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। শিউলী তাঁর দোকানের নিয়মিত ক্রেতা ছিলেন।
জিও খান বলেন, ‘আমি শনিবার কাজ করছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে দোকান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসি। এসে দেখি ভদ্রমহিলা ফুটপাতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন। পাশেই একটি চেয়ারে তাঁর পাঁচ মাসের শিশু। তাঁর (শিউলী) অনেক রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আমি তাঁর পালস (নাড়ি) পরীক্ষা করেছিলাম, কিন্তু সেটি কাজ করছিল না। আমি তাঁর ঘাড়ে ছুরির ক্ষত দেখে সিপিআর করার চেষ্টা করেছি।’
এ সময় একজন চিকিৎসক গাড়িতে করে ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনিও সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। এরপর পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সের কর্মীরা শিউলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
শিউলীর ভাই আকতার হোসেন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, মাস তিনেক আগে একদিন রাতে সন্তানের কান্নায় বিরক্ত হয়ে তাঁর গলা চেপে ধরেন হাবিবুর। তখন সন্তানকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রীকে মারধর করেন তিনি। শিউলী এ ঘটনা ভাইদের জানালে পরদিন সকালে হাবিবুর ছুরি নিয়ে তাঁকে মারতে যান। নিজেকে বাঁচাতে বাথরুমে আশ্রয় নেন শিউলি। সেখান থেকে ভাবিকে ফোন দিয়ে পরিস্থিতি জানান। তাঁর ভাবি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানান।
আকতার হোসেন আরও বলেন, পুলিশ এসে হাবিবুরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এ শহরে আর বাস করতে পারবেন না, এই শর্তে জামিনে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু আবারও শিউলীর বাসার দরজায় নক করেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে নিরাপত্তার কারণে তাঁদের পার্শ্ববর্তী শহর ব্রাডফোর্ডে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু সেখানেই শিউলীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তিনি।
হাবিবুর ব্রাডফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরের ছাত্র। দুই বছর আগে উচ্চশিক্ষার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে আসেন। পরে তাঁদের এক সন্তানের জন্ম হয়। তখন তাঁরা ওল্ডহাম শহরে বাস করতেন। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় তাদের বাড়ি বলে জানা গেছে।