স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, শ্রীলঙ্কা এ ফাঁদেই পড়েছিল: রেহমান সোবহান
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ৪:০৪:২৭ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেছেন, দেশে স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, আর শ্রীলঙ্কা এই ঋণের ফাঁদেই পড়েছিল। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেন, শ্রীলঙ্কা স্বল্পমেয়াদি ঋণের ফাঁদে পড়েছিল, বাংলাদেশেও এমন ঋণ বাড়ছে। দেশের মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বিদেশি ঋণে করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে প্রয়োজনের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি ব্যয় হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কা স্বল্পকালীন ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। রপ্তানি কমে আসায় এসব ঋণ যথাযথভাবে পরিশোধ করতে পারেনি দেশটি। আফ্রিকার কিছু দেশেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ তেমন অবস্থানে নেই। কিন্তু দেশে স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে করের মাধ্যমে সরাসরি অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।
এ ছাড়া কর ব্যয় এবং প্রণোদনা পর্যালোচনা, করের আওতা বাড়ানো, কর ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি অনুসরণ, তহবিলের নতুন উৎস খোঁজা, উন্নয়ন অর্থের উৎস বৈচিত্র্যকরণ, বেসরকারি খাতের ঋণে সতর্কতা, নমনীয় বিনিময় হার এবং প্রকল্প নির্বাচনে সতর্কতা, ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা গ্রহণ, প্রধান আমদানিকারক উৎস থেকে বাণিজ্য অর্থায়নের জন্য রেয়াতযোগ্য ঋণের সন্ধান করার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণ ও পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে যা সরকারকে অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে। প্রকৃতপক্ষে আমরা পাবলিক ও পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতার দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এর সঙ্গে ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে। বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ টাকা। এখন তা দেড় লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।