বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সাথে ফোবানা নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মার্চ ২০২৪, ১০:৪১:০৯ অপরাহ্ন
জুয়েল সাদত: ফোবানার চেয়ারম্যান এটর্নি মোহাম্মদ আলমগীর ও ৩৮তম ফোবানার হোস্ট কমিটির সাথে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও এটর্নি জেনারেলের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি এক রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বাংলাদেশের আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার। এছাড়াও ব্যক্তিগত সফরে আগত এবং ওয়াশিংটনে অবস্থানরত বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের। বিগত কয়েকদিনে এই প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্ট-এর হিয়ারিং এবং বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আমেরিকার প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ও দুই দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলাপ আলোচনা করেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোন প্রধান বিচারপতির এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ।
আরো পড়ুন
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত
বাংলাদেশ থেকে আগত এই বিশেষ প্রতিনিধি দলের সম্মানে গত বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় ভির্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সে ফোবানার কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীরের বাসভবনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান হয়েছে।
এতে বিশেষ অতিথিবৃন্দ ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ (কমার্স মিনিস্টার এবং ফার্স্ট সেক্রেটারী), স্বনামধন্য মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং ফোবানা হোস্ট কমিটির প্রধান উপদেষ্টা রোকেয়া হায়দার, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর এবং চেয়ারম্যান, আবুবকর হানিফ, টেকনাফ টেকনোলজির প্রেসিডেন্ট ফয়সল কাদের, ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনের হোস্ট কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি আবু রুমী, ফোবানা হোস্ট কমিটির চীফ কোঅর্ডিনেটর এন্থনি পিউস গোমেজ, ফোবানা হোস্ট কমিটির কালচারাল চেয়ারম্যান তাসকিন বিন্তে সিদ্দিকী, ফোবানা এক্সকিউটিভ কমিটির সদস্য টিএম আলম, ফোবানা হোস্ট কমিটির কো-কনভেনর শামছুদ্দিন মাহমুদ, ধ্রুপদের কর্ণধার হিরণ চৌধুরী, বাই এর প্রেসিডেন্ট শফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই ফোরামের প্রেসিডেন্ট কাইয়ুম খান, সুরবিতানের কর্ণধার বুলবুল ইসলাম, ফোবানা হোস্ট কমিটির উপদেষ্টা মাহমুদুন নবী বাকী, মোহাম্মদ সফিকুল আজম আজাদ, এডভোকেট অমর ইসলাম, এডভোকেট কাজী স্বপন, এটর্নি রাশেদা হক নীপু , এটর্নি ক্রিস্টফার জেনেরাস, বাংলাদেশস্থ মার্কিন দূতাবাসের লিগ্যাল এডভাইজার নূরান চৌধুরী, ফোবানা হোস্ট কমিটির আইটি কন্সালট্যান্ট শাহাদত হোসেন সহ ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার আরও কিছু গণ্যমান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
প্রথমেই বিশেষ অতিথিবৃন্দ এবং উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন সঞ্চালক এন্থনি পিউস গোমেজ। এর পর ফুল দিয়ে সম্মানিত অতিথিদের অভ্যর্থনা ও স্বাগত জানানো হয়। পরে অনুষ্ঠানের আয়োজক ফোবানা কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এটর্নি মোহাম্মদ আলমগীর আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্যে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বাংলাদেশের জাতীয় প্রেক্ষাপটে বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অবদানের কথা উল্লেখ করে তাদের অভিনন্দন জানান এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া ওয়াশিংটনে লেবার ডে উইকেন্ডে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ৩৮তম ফোবানা সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবার জন্য প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে আমন্ত্রণপত্র প্রদান করেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেবার জন্য এটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিনকে ফোবানা সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেবার জন্য আমন্ত্রণপত্র প্রদান করেন।
এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দীন সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রথমেই সকল প্রবাসীদের বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নধারার উপর আলোকপাত করে উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন আর আগের বাংলাদেশ নেই, এগিয়ে গিয়েছে অনেক দূর। তিনি বলেন, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র অবস্থান থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ আজ এক মজবুত ভিত্তিভূমিতে এসে দাঁড়িয়েছে। তাই দেশের উন্নয়নে সবার ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
এরপর বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি প্রবাসীদের অবস্থান, কাজ ও ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, সকল প্রবাসীই বাংলাদেশের সম্পদ। জীবিকার তাগিদে প্রবাসী হলেও শেকড়কে ভূলে না গিয়ে প্রবাসের মাটিতে বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আরও ব্যাপকভাবে তুলে ধরার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, প্রবাসী হলেও দেশকে কীভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সে-বিষয়ে প্রবাসীদের ভাবতে হবে এবং যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে, তাই প্রবাহমান উন্নয়নধারায় প্রবাসীদের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া প্রবাসীদের ভূমিকা দুই দিকেই গুরুত্বপূর্ণ- একদিকে যেমন দেশের সন্তান হিসেবে দেশের প্রতি রয়েছে দায়িত্ব এবং কর্তব্য, তেমনি এদেশের স্থায়ী বাসিন্দা বা নাগরিক হিসেবে এদেশের প্রতিও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, কারণ এই দেশ প্রবাসীদের দিয়েছে একটি উন্নত জীবন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে হবে, তরুণ প্রজন্মকে আমাদের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার গৌরবান্বিত ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে হবে, যেন শেকড়ের সাথে তাদের এক দৃঢ় বন্ধন গড়ে উঠে।
সবশেষে তিনি উপস্থিত সবাইকে এবং আয়োজক ফোবানা কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এটর্নি মোহাম্মদ আলমগীরকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সবার মঙ্গল কামনা করেন।