মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ভাইয়ের নাম স্কুলের ভবন থেকে মুছে ফেলা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৯:৪৬:৪৬ অপরাহ্ন
সিলেট অফিস: সিলেট-৩ আসনের টানা তিন বারের এমপি প্রয়াত মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর ভাই প্রয়াত রেজা-উস-সামাদ চৌধুরী (আর.এস চৌধুরী)-এর নাম পিপিএম স্কুলের একটি ভবন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
এ নিয়ে মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর ভাতিজা, আর.এস চৌধুরীর ছেলে হাসান-উস-সামাদ চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করেছেন সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে। এতে সামাদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সামাদ পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভবনটির শীর্ষে প্রতিষ্ঠাতার নাম পুনরায় রাখার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেজা উস সামাদ চৌধুরীর (আরএস চৌধুরী) ছেলে হাসান উস সামাদ চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান-উস-সামাদ চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন- ‘ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়নের আওতাধীন পুরানবাজার এলাকায় ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত পিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন আমার পিতা মরহুম রেজা উস সামাদ চৌধুরী (আরএস চৌধুরী)। তিনি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাসহ পরিচালনা করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। ১৯৯৮ সালে শিক্ষানুরাগী আমার পিতা মৃত্যুবরণ করেন। স্কুলে তাঁর অবদানস্বরূপ ও স্মৃতি রক্ষায় স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে তাঁর নামে (আরএস চৌধুরী ভবন) নির্মাণ করা হয়। যেটি তৎকালীণ সাংসদ আমার চাচা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সরকারি অর্থায়নে ওই ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ভবনটির উপরে “আর এস চৌধুরী ভবন ” লেখা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি কে বা কারা স্কুল ভবন থেকে আমার মরহুম পিতার নামটি মুছে ফেলেছে।’
লিখিত বক্তব্যে হাসান উস সামাদ আরও বলেন, পিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তার বাবা রেজা উস সামাদ চৌধুরী (আরএস চৌধুরী)। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি থেকে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে গেছেন। আরএস চৌধুরীর অবদান ও স্মৃতি রক্ষায় স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে ‘আরএস চৌধুরী ভবন’ নামে নতুন একটি ভবন নির্মাণ করেন তাঁর ভাই প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এরপর থেকে আরএস চৌধুরী ভবন নামে সকল কার্যক্রম চলে আসছিল। সম্প্রতি কারা ভবন থেকে ‘আরএস চৌধুরী ভবন’ লেখা মুছে ফেলেছে। গত ২১ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া ছবি দেখে বিষয়টি তাদের নজরে আসে।
হাসান উস সামাদ চৌধুরী আরও বলেন- ‘আমরা প্রবাসে থাকি। গত ২১ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাম বিকৃতি করা ছবি দিয়ে মানুষজন প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট দিতে থাকলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা হতভম্ব হয়ে যাই। এই ঘটনা নজরে আসার পরপরই আমরা পরিবারের একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করি। এর মধ্যে আমার ছোট চাচা- চ্যানেল এস-এর চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী (জেপি) বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। আমার দুই চাচা শহিদ উস সামাদ চৌধুরী ও আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী দুইজনেই বিষয়টি মাইজগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জুবেদ আহমেদ চৌধুরী শিপুকে অবগত করে সুরাহা দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন হাসান উস সামাদের চাচা ফ্রেন্ডস অফ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল সিলেট ইউকে’র চেয়ারম্যান, যিনি চ্যানেল এস-এর চেয়ারম্যান আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী (জেপি)। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘আমাদের পরিবার খুবই বড়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন, সেটা আমার ভাতিজা বলে গেছেন। আমরা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব কী করব। আমরা জেনেছি ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই মুছে ফেলার কাজটি হয়নি। সুতরাং কমিটি নামটি পুনরায় ইনস্টল করে নিলে আমরা খুশি হব। আমার ভাই সারকারখানায় একটা ছোট্ট চাকরি করতেন। স্কুলটির বিপরীত দিকে একটা বাসা বানিয়ে চলে আসেন, তাতে থাকতেন। তিনি আমৃত্যু শ্রম মেধা অর্থ দিয়ে স্কুলটি ম্যানেজ করে গেছেন। তিনি মারা গেছেন ১৯৯৮-এ, এতো বছর পর কেন তাঁর নাম মুছে ফেলা হল?
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আরএস চৌধুরীর ভাই শহিদ উস সামাদ চৌধুরী, আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী, শামসুল হক চৌধুরী, আরএস চৌধুরীর ছোট ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী এহসান উস সামাদ চৌধুরী, আরেক ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিহাম উস সামাদ চৌধুরী, হাসান উস সামাদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই মুশফিক উস সামাদ চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাকিব উস সামাদ চৌধুরী।



