ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়েছে, উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অতঃপর ইরান অস্ত্র গ্রেডের ইউরেনিয়াম উৎপাদন ত্বরান্বিত করেছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আলজাজিরার।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র মঙ্গলবার রাতে আইএইএর প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইরানের পারমাণবিক সম্প্রসারণ এমন এক সময়ে আরও বেশি উদ্বেগজনক, যখন ইরান সমর্থিত বাহিনীগুলো ওই অঞ্চলে বিপজ্জনক ও অস্থিতিশীল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে– সম্প্রতি মারাত্মক ড্রোন হামলা, ইরাক ও সিরিয়ায় অন্যান্য হামলার চেষ্টা এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনকারী জাহাজে হুতি বিদ্রোহীদের হামলা।

জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে ইরান অস্ত্র গ্রেডের কাছাকাছি যে ইউরেনিয়ামের উৎপাদন করে আসছিল, তা বাড়িয়েছে। যদিও এর আগে ২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে ইউরেনিয়াম উৎপাদন ধীর করেছিল দেশটি।

কম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যাতে ইউ-২৩৫ থাকে, ৩ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে তা ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের তেল উৎপাদনে। এ ক্ষেত্রে ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতার মাত্রা ৬০ শতাংশ। আর অস্ত্র বানানোর ইউরেনিয়াম অন্তত ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ হতে হয়। ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ৯০ শতাংশের অস্ত্র গ্রেড স্তর থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার জন্য দীর্ঘ সময় লাগে।

আইএইএ বলেছে, তাদের পরিদর্শকরা নভেম্বরের শেষ থেকে নাটানজ ও ফোরডোর কেন্দ্রগুলোয় প্রতি মাসে প্রায় ৯ কেজি ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধির হার যাচাই করেছেন। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে লাগাম টানার আগে দেশটি এই হারে ইউরেনিয়াম উৎপাদন করেছিল। গত জুনেও দেশটি প্রতি মাসে তিন কেজি ইউরেনিয়াম উৎপাদন করেছিল।

ইরানের পারমাণবিক শক্তির প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি বুধবার আইএইএর সতর্কতাকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ইরান নতুন কিছু করেনি এবং নিয়ম অনুযায়ীই কাজ করছে।

ইরানের কর্মকর্তারা ধারাবাহিকভাবে বলে আসছেন, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা বা অভিপ্রায় নেই।