আসন ভাগ নিয়ে আ.লীগের শরীকরা ক্ষুব্ধ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫৪:১৪ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে শরিক দলগুলোর টানাপোড়েন কাটেনি। ১৪ দলকে মাত্র ৭ টি আসন দিতে রাজি হয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
এ নিয়ে জোটের শীর্ষনেতারা চরম ক্ষুব্ধ। আসন সমঝোতা নিয়ে অসন্তুষ্টির মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়েছেন ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
এর আগে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ ঝাড়েন তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি।
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাসদ নেতা ইনু বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন এবং তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা রাজনৈতিক ঐক্যেরই ফলাফল।
তিনি বলেন, “বিপদে ঐক্য, বিপদ কেটে গেছে মনে করে আত্মপ্রসাদে ভুগে ঐক্যকে অবহেলা করা আত্মঘাতী।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বামপন্থি কয়েকটি দলের জোটের ভূমিকা তুলে ধরে ইনু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে বড়র অহংকার এবং ছোটর হীনমন্যতা পরিহার করা উচিত।
২০০৮ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। এবার নিয়ে চারটি নির্বাচনে ১৪ দলে শরিকদেরকে সবচেয়ে কম আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরিকদেরকে ১৬টি আসনে ছাড় দেওয়া হলেও এবার মাত্র সাতটি আসনে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। বর্তমানে সংসদে আছেন এমন নেতাদের মধ্যে জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারকে ফেনী-১ ও তরীকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীকে তার চট্টগ্রাম-২, বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরীকে তার মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে আসনে ছাড় দেওয়া হয়নি।
বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নানের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা হওয়ার পর তার লক্ষ্মীপুর-৪ আসন জাসদকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে তিনটি নির্বাচনের পর ঢাকা-৮ থেকে সরিয়ে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। প্রথমে তাকে বরিশাল-৩ আসন দেওয়ার কথা জানানো হয়। কিন্তু সেখানে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী প্রার্থী আছে। এ কারণে পরে মেনন বরিশাল-২ আসনে গিয়েছেন।
জাসদ সভাপতি ইনুর কুষ্টিয়া-২ আসনে আগে থেকেই প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে সেখানে ক্ষমতাসীন দলের নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াইয়ে আছেন, যাকে ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ।
এই আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী কেবল ইনুর আসনে নয়, শরিকদের ছেড়ে দেওয়া প্রতিটি আসনেই আছে।
এ কারণে ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করা হলেও তাদের নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া সহজ হচ্ছে না। যারপরনাই ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের শরিকরা।
শরিকরা আওয়ামী লীগের কাছে দাবি জানিয়েছে যেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত রাজি হচ্ছে না। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তার নির্বাচিত হওয়াও নিশ্চিত নয়। লড়াই করেই জিততে হবে সবাইকে।
ইনুর আরও কিছু আসনে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব ওবায়দুল কাদের নাকচ করে দিয়েছেন।
ইনু তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, মহল, গোষ্ঠী ও ব্যক্তির ঐক্যে জোর দেন।
বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি ও তাদের রাজনৈতিক সঙ্গীদের ক্ষমতা পুনর্দখলের আন্দোলন প্রতিহত করতে হবে, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে।
জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকনের পরিচালানয় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন, সহ-সভাপতি নুরুল আকতার, শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, মোহাম্মদ মোহসীন, ওবায়দুর রহমান চুন্নুও বক্তব্য রাখেন।