মনোনয়নে টিকে যাওয়া ৪৫ আ.লীগের প্রার্থী অতঃপর বঞ্চিত হতে পারেন, উৎকণ্ঠায় জাপা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪১:৪৩ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: বড় ধরনের কোনো নাটকীয়তা না ঘটলে জাতীয় পার্টি ও শরিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগ ৪৫টি আসন ছেড়ে দিতে পারে।
৩৫টি আসন পেতে পারে জাতীয় পার্টি। ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, তরীকত ফেডারেশন একটি, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি (জেপি) দুটি এবং অন্য দু-একটি দলকে এক থেকে দুটি আসন ছাড় দেওয়ার আলোচনা রয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া কল্যাণ পার্টিকে একটি, বিএনএফ এবং তৃণমূল বিএনপিকে দুটি আসন ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব আসন ছেড়ে দেওয়ার ফলে যারা নৌকা পেয়েছেন তাদের কপাল পুড়বে। এর সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৪৫।
বর্তমান একাদশ সংসদে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব আছে ওয়ার্কার্স পার্টির তিনটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তিনটি এবং তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টির (জেপি) একটি করে। আটটি আসন রয়েছে তাদের। আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদিকে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ বলে আসছে- তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। প্রায় ২৯টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
বিএনপি না থাকায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে। কোন দল বিরোধী দল হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবে, সে হিসাবটাও মাথায় রাখছেন তারা। আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। এই শরিক দলগুলোকে পাঁচ-ছয়টি আসন দেওয়া হতে পারে।
যেসব আসনে তাদের প্রার্থী করা হবে, সেখানে নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে আসন সমঝোতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি এবার নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। জাতীয় পার্টি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না থাকে তাহলে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার সংকটে পড়বে। এটা ভালো মতোই বুঝতে পেরেছে জাতীয় পার্টি। আর তাই তাদের আবদারের শেষ নেই। প্রকাশ্যে তারা বলছে, তারা সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা বা আসন ভাগাভাগির মধ্যে নেই। নিজেদের শক্তিতে তারা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু গোপন আলাপ-আলোচনায় তারা অন্তত ৩০টি আসনে ছাড় চাইছে আওয়ামী লীগের কাছে।
জাতীয় পার্টির শর্ত হলো- যেসব আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড়তে হবে সেসব আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। শুধু তাই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে যারা শক্তিশালী তাদেরও বসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসানোর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। আওয়ামী লীগ ২০টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু জাতীয় পার্টি চায় আরও বেশি।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর আর ভোট গ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা না হওয়ায় জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা অস্বস্তি উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। এ অবস্থায় দলের শীর্ষ নেতারা বিশেষ করে দলের কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বর্তমান সংসদ সদস্যরা নৌকা প্রতীকধারী আর আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করতে নারাজ। তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো এবারও আসন সমঝোতা চান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির এক কো-চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার মধ্যদিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশ না নেওয়া দলগুলোসহ নির্বাচনবিরোধী মানুষের শত্রু হয়েছি। এখন মাঠপর্যায়ে নৌকা প্রতীকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের শত্রু হতে চাই না। সমঝোতা না হলে কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।