জঙ্গি দমন: মার্কিন প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩৭:১২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: কঠোরভাবে জঙ্গি দমন অব্যাহত রাখায় বাংলাদেশ সরকার ২০২২ সালে এ দেশে এ ধরনের অল্প কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষ করে, আল কায়দাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠী যেমন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং ইসলামিক স্টেটসংশ্লিষ্ট (আইএস) নব্য জেএসবির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেররিজম–২০২২’–এর বাংলাদেশ অংশে এসব কথা বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর প্রশাসন জঙ্গি দমনে জিরো টলারেন্স নীতিতে জোর দিয়ে থাকেন। তবে বাংলাদেশ বরাবরই আল–কায়েদা ও আইএসের মতো বৈশ্বিক জঙ্গিগোষ্ঠীর উপস্থিতি অস্বীকার করে আসছে।
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের অক্টোবরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জঙ্গিগোষ্ঠী জেএএইচএস দমনে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয়। দেশের যে কোনো স্থানে হামলা চালানোর লক্ষ্যে আল কায়দায় অনুপ্রাণিত সংগঠনটি চট্টগ্রামের পার্বত্যাঞ্চলে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। জেএএইচএস নৃত্বাত্ত্বিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে সহযোগিতা দিচ্ছিল। বছরের বাকি সময়জুড়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ কয়েক ডজন জেএএইচএস সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
এছাড়া প্রতিবেদনে ২০২২ সালে বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠীসংশ্লিষ্ট ঘটনা নিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিরুদ্ধে অভিযান ছাড়া ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখ করেছে। এতে বলা হয়, আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছিল।
২০২২ সালের অপর ঘটনায় ২০ নভেম্বর জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেন। তাঁরা দুজনই ২০১৫ সালে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যার মামলায় দণ্ডিত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় আনসার আল-ইসলামের ২০ জন সন্দেহভাজন সদস্যকে অভিযুক্ত করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ।
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টারটেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসিইউ) এবং বাংলাদেশ পুলিশের অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এবং দেশজুড়ে পুলিশের অন্যান্য ইউনিটকে নানা ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের (এটিটি) বিচারক ও কৌঁসুলিদেরও প্রশিক্ষণ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। নথিপত্র ব্যবস্থাপনা, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা, সন্ত্রাসীদের বিচার করা এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নবিষয়ক মামলা পরিচালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জল ও স্থল সীমান্তে টহল দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। বন্দরে উন্নততর সরঞ্জাম ব্যবহার ও পদ্ধতি অনুসরণ এবং জনবল বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্য ও যাত্রীদের স্ক্রিনিং করার ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বন্দরের নিরাপত্তা, বিশেষ করে প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিমানবন্দরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে, ঢাকা বিমানবন্দরে (হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) নতুন টার্মিনালে অত্যাধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে। বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশ ইন্টারপুলের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে। ইন্টারপুলের জঙ্গি তালিকায় বাংলাদেশের কেউ নেই।