বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা কাল জেনেভায়, এ্যামনেস্টি যা বললো
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ৯:২৫:৫৯ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপ আগামীকাল সোমবার চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে।
জেনেভায় ওই সভায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রশ্নের জবাব দেবে সরকার। এবারের বৈঠকে অংশ নিতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে জেনেভায় রয়েছে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
পররাষ্ট্র এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এই পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বৈঠকে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গত চার বছরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরবে। পাশাপাশি এ সম্পর্কে উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবে।
এর আগে, ২০০৯ সালে প্রথমবার, ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বার এবং ২০১৮ সালে তৃতীয়বার ইউপিআর-এ অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। মূলত তিনটি প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এই পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে— সরকারের দেওয়া জাতীয় প্রতিবেদন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বা সংগঠনের জোটগুলোর দেওয়া প্রতিবেদন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয়ের প্রতিবেদন। জেনেভায় ইউপিআর রিভিউ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক গত ৬ নভেম্বর শুরু হয়েছে। এই বৈঠক আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এবারের ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে ১৪ দেশের মানবাধিকার পর্যালোচনা করা হবে, এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রতি চার বছর পরপর ইউপিআর অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর গত চার বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র পর্যালোচনাধীন রাষ্ট্রকে মানবাধিকারসংক্রান্ত নানা বিষয়ে প্রশ্ন ও সুপারিশ করে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যা বলল অ্যামনেস্টি
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। শনিবার (১১ নভেম্বর) সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই বিবৃতি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চাইতে বলেছে সংগঠনটি।
১৩ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চতুর্থবারের মতো জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সর্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনায় (ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ-ইউপিআর) বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।
বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপআঞ্চলিক পরিচালক লিভিয়া স্যাকার্দি বলেন, চতুর্থ ইউপিআর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের মানবাধিকার, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, বিরোধী নেতা, স্বাধীন গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ পদ্ধতিগত আক্রমণের মুখোমুখি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ইউপিআরের জন্য অ্যামনেস্টির দেওয়া তথ্যে আগের সুপারিশ বাস্তবায়নের মূল্যায়ন করা হয়েছে। তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করাসহ শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার, অন্যান্য মানবাধিকার সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়াও নির্বাচনের আগে মানবাধিকারের চর্চা করার জন্য যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে, নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে।




