গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য হামাসকে যে শর্ত দিলেন বাইডেন ও ইসরাইল
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ২:৫২:৪০ অপরাহ্ন
ইসরাইলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তুপ গাজা
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় শুরু হতে যাওয়া স্থল অভিযান এমনকি যুদ্ধ বাতিল করা হবে কেবল শর্ত মানলে। হামাস যদি তার হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করে, তাহলেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘প্রথমে (হামাসকে) সব জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে, তারপর যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গ উঠতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে, ইসরায়েলির সশস্ত্র বাহিনীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কনরিকাস অস্ট্রেলিয়ার এবিসি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, গাজায় স্থল অভিযান এমনকি যুদ্ধ বাতিল করা হবে কেবল দুটি শর্তে। প্রথমটি হলো, গাজায় হামাসের জিম্মায় থাকা সব বন্দীদের মুক্তি ও বিনা শর্তে হামাসের অস্ত্র সমর্পণ।
আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কনরিকাসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, গাজায় ইসরায়েলি স্থল অভিযান অবশ্যম্ভাবী কি না। জবাবে কনরিকাস বলেন, ‘এখানে আমাদের লক্ষ্য হলো হামাসের সামরিক সক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা। এটি যদি বিমান হামলার মাধ্যমে এবং আমাদের সৈন্যদের খুব সীমিত ব্যবহারের মাধ্যমে করা যায়, তাহলে খুবই ভালো। পাশাপাশি কম ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি স্থিতাবস্থা তৈরি করা গেলে তবে এটি দুর্দান্ত বিষয়।’
কনরিকাস আরও বলেন, যদি হামাস লুকিয়ে থেকে, তাদের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি না দেয়, তারা এখন যেমনটা করছে, তাহলে সম্ভবত আমাদের ভেতরে যেতে হবে এবং অভিযান সম্পন্ন করতে হবে। আমাদের কথা হলো, আমাদের ২১২ জন জিম্মিকে ফিরিয়ে দাও, নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করো, তাহলে যুদ্ধ শেষ হবে।
ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর এই মুখপাত্র আরও বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে এই যুদ্ধের শেষ অবস্থানটা হবে এমন, হামাস ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে এবং তারা আর কখনোই কোনো ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের হুমকি দেয়ার ক্ষমতা রাখবে না এবং অবশ্যই ৭ অক্টোবর তারা যে ধরনের ভয়ংকর আক্রমণ করেছিল, তা করার ক্ষমতা নিঃশেষ করে দেয়া। এটিই আমাদের লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চলায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে শত শত সশস্ত্র হামাস যোদ্ধা। ইসরায়েলে ঢুকে নির্বিচারে বেসামরিক লোকজনদের হত্যার পাশাপাশি ওই দিনই ২ শতাধিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় যোদ্ধারা।
এদিকে হামাস হামলা চালানোর পর ওই দিনই গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয় গাজার বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিং, যা উপত্যকার ‘লাইফ লাইন’ নামে পরিচিত।
ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। অন্যদিকে গত ১৭ দিন ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ জন। নিহতদের মধ্যে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ২ হাজার ৫৫ জন এবং নারী রয়েছেন ১ হাজার ১১৯ জন।