৭০% ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে ঢাকার রাস্তা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৪৯:৩৯ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: ঢাকায় গণপরিবহন ব্যবহার করেন ৫৩% যাত্রী। ব্যক্তিগত গাড়ি ১১% যাত্রী ব্যবহার করেন। অথচ ঢাকার ৭০% রাস্তা ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার দখলে থাকে। ঢাকায় মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ আর রিকশার কোনো হিসেব নেই।
শনিবার (২১ অক্টোবর) ধানমন্ডিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ আই মাহবুন উদ্দিন আহমেদ বলেন, “ঢাকার যানজট নিয়ন্ত্রণে ফ্লাইওভার, ওভারপাস, ইউলুপ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও যানজট কমছে না বরং বাড়ছে। কারণ এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট মাত্রায় স্টাডি করা হয়নি।”
পুরোনো বাস পাল্টাতে হবে
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, “ঢাকায় যে পরিমাণে মানুষের চাপ বাড়ছে, তাতে মেট্রোরেল ও সাবওয়ে যানজট কমাতে পারবে না। মেট্রোরেল ও সাবওয়েতে কয়েক লাখ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এই বিপুল অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে আর মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার পুরোনো বাস প্রত্যাহার করে ৪,০০০ আধুনিক নতুন বাস এসি, নন এসি ও সাধারণ তিন ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করে রুট ফ্রাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে পরিচালনা করলে এবং বাসের জন্য আলাদা লেন ব্যবস্থা করলে প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহারকারীরা বাসে চলাচল করবেন।”
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব বাস ও বাইসাইকেল লেন
ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজস্ব বাস সার্ভিস বাধ্যতামূলক করার দাবি তুলেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সংস্থাটির মতে, “প্রয়োজনে বাস ক্রয়ে সরকারি ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে প্রাইভেট গাড়ির ব্যবহার কমবে। বাইসাইকেল লেন তৈরি করলে কয়েক লাখ ছাত্র-যুবক বাইসাইকেলে যাতায়াত করবে। পুরো ঢাকেই সাইকেল রেঞ্জের আওতায়। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করলে রাজধানীর যানজট একেবারেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।”
সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, “যানজট কমলে ঢাকায় মোটরসাইকেল ব্যাপকভাবে কমবে। একইসঙ্গে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ও মফস্বল শহরকেন্দ্রিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করলে ঢাকামুখী জনস্রোতও কমবে। এসব সমন্বিত ও টেকসই উদ্যোগের ফলে রাজধানীর যানজট ব্যাপক মাত্রায় হ্রাস পাওয়ায় দেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বেগবান হবে।”
রাজনৈতিকদের চাঁদাবাজি
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সড়ক পরিবহনে বিশৃঙ্খলার পেছনে সুবিধাবাদী গোষ্ঠী রয়েছে, যারা নানা অজুহাতে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে না। এই খাতে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরাট সুযোগ থাকায় গোষ্ঠীটি হীনস্বার্থে সড়ক পরিবহন খাতে অব্যবস্থাপনা টিকিয়ে রাখছে। সমস্যাটি রাজনৈতিক হওয়ায় যখন যে দল ক্ষমতাসীন থাকে, তখন সেই দলের লোকজন সড়ক পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চাঁদাবাজি করে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সুপারিশ
সড়ক দুর্ঘটনা বোধে বেশকিছু সুপারিশ জানিয়ছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সেগুলো হলো– দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।