ইসরাইলের পক্ষে আসছে চার মার্কিন রণতরী, রাশিয়া বলেছে সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়াতে পারে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ৫:৩৮:২২ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নৌবাহিনীর রণতরী স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। রণতরীটি ইসরাইলের পানিসীমায় এসে অবস্থান নেবে। সেখান থেকে হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসলাইলকে সহায়তা করবে। হামাস বলেছে, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসনে অংশ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওদিকে, ইসরাইলে ও ফিলিস্তিনের চলমান সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক বিস্তৃত সংঘাতে পরিণত হতে পারে।
তিনি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের চারপাশে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে প্রত্যক্ষ করছি। এই পরিস্থিতি আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পরিপূর্ণ। যে কারণে এটি আজ আমাদের বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
পেসকভ বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, চলমান পরিস্থিতিকে শিগগিরই শান্তিপূর্ণ পথে নিয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ এই ধরনের সহিংসতা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে তা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। একই সঙ্গে সংঘাত অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা ওই অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ।”
ক্রেমলিনের এই মুখপাত্র বলেন, “হামাসের হামলায় ইসরাইলি কতজন রুশ নাগরিক হতাহত হয়েছে সে বিষয়ে রাশিয়ার দূতাবাসের কাছে এখনও কোনো তথ্য নেই। আর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কোনো রুশ নাগরিক হতাহত হয়েছেন কি না তা জানতে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে রাশিয়া।
উল্লেখ্য, শনিবার ভোরে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলের অভ্যন্তরে ঢুকে হামলা শুরু করে। এতদিন ইসরাইলের বিপক্ষে শুধুমাত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছে ফিলিস্তিন। শনিবারই প্রথমবারের মতো আগে ইসরায়েলে হামলা চালালো ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে ইসরাইলিদের হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এছাড়াও ইসরাইলের হামলায় দুই হাজার ৭৫০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইসরাইলের সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’ দাবি করেছে, হামাসের হামলায় এরই মধ্যে ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজার দুই শতাধিক।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের জনগণ বা প্রতিরোধ এতে বন্ধ হবে না। আমরা আমাদের জনগণ এবং আমাদের পবিত্র স্থানগুলো রক্ষা করবো।
যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের স্ট্রাইক গ্রুপে রয়েছে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড, একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী, সাথে গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এবং গাইডেড মিসাইল ক্রুজার ।
লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে আরও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরাইল ও হামাসের তীব্র লড়াইয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই অঞ্চলটিতে। দুপক্ষেরই ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। ইসরাইলের দখলদারিত্ব ও ফিলিস্তিনিদের ওপর দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নের জেরে এই হামলা চালাচ্ছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গাজা ভূখণ্ডের যে অংশটুকু এখন পর্যন্ত টিকে আছে, ইসরায়েলের হাত থেকে হামাসই তা রক্ষা করে আসছে।
ইসরাইলকে সহায়তার প্রসঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ইউএসএস জেরার্ল্ড আর. ফোর্ড’ বিমান রণতরী, একটি ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুজার এবং চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী অঞ্চলটির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। মার্কিন যুদ্ধবিমানও পাঠানো হবে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রয়োজনে আগামীতে আরও সামরিক সহায়তা পাঠানো হবে ইসরাইলকে। কোনভাবেই যাতে ইসরায়েলের শত্রুরা জয়ী হতে না পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।




