শিশুর ভাল স্বাস্থ্যের জন্যে ভিটামিন ডি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ৯:৪৫:১৮ অপরাহ্ন
অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন : শিশুর প্রাথমিক বৃদ্ধি ও বিকাশে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুদের রক্তে ক্যালসিয়াম, ফসফেটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হাড় সবল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। পাশাপাশি এই ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি কমে যায় বা বিকাশ দেরিতে হতে পারে।
যেসব শিশুর ঘন ঘন সংক্রমণ হয়, তাদের শরীরে এর ঘাটতি থাকতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি না পেলে শিশুর দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে দাঁত ক্ষয় বা ক্যাভিটি হতে পারে। অনেক সময় এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শিশুর দাঁত দেরিতে ওঠে।
বাংলাদেশে ইদানীং শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর অভাব বা স্বল্পতা উল্লেখযোগ্য হারে লক্ষণীয়। বর্তমানে দেশের অনেক শিশুই উপসর্গহীন বা সাব্লিনিক্যাল ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাধারণত পর্যাপ্ত সূর্যের আলো শরীরে না লাগা, অপর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ বা ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাদ্যাভাবের কারণেও এর ঘাটতি হতে পারে। এ ছাড়া লিভার, কিডনি এবং বংশগত কিছু রোগ শরীরে ভিটামিন ডি-কে সক্রিয় ও কার্যকরী পদার্থে রূপান্তর করতে বাধা দেয়। ভিটামিন ডি-এর অভাবে হাড় নরম হয়ে যায়, পরিণতিতে শিশুর রিকেট এবং প্রাপ্তবয়স্কদের অস্টিওম্যালাসিয়া হতে পারে।
সাব্লিনিক্যাল ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকলে পাঁচ বছরের শিশু এমনকি নবজাতকের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। জীবনের প্রথম দিকে শিশু যদি ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগে, তবে পরবর্তী সময়ে অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে সে ঝুঁকিপূর্ণ হয়। উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় দেশেই শিশু-কিশোরদের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির পরিমাণ পরিবর্তনশীল। এর জন্য বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। যেমন– পুষ্টির অভাব, সূর্যের আলো গায়ে না লাগানো ইত্যাদি।
সূর্যের আলোই ভিটামিন ডি-এর প্রধান উৎস। তবে ইলিশ ও এর ডিম, রূপচাঁদা, টুনা মাছ, মাংস, কলিজা, ডিমের কুসুম, দুধ, দই, পনির, ঘি, মাখন ইত্যাদি ভিটামিন ডিতে সমৃদ্ধ। কিছু শাকসবজিতে, বিশেষ করে ব্রকলি, মাশরুম, বাদাম, কপিতেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ শিশু চিকিৎসক সমিতি; সাবেক অধ্যাপক ও পরিচালক, ঢাকা শিশু হাসপাতাল।