তারা আন্দোলন করুক আপত্তি নেই, দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যাব না: লন্ডনে শেখ হাসিনা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ২:১৫:২২ অপরাহ্ন
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
লন্ডন অফিস: আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রামের পথ বেয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। গণতন্ত্রের জন্যে আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগ। অনেক প্রাণ গেছে, অনেক আহত, অনেকে ঘর-বাড়িহারা হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্রের ইতিহাস। বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি প্রবাসী ভাইবোনদের ত্যাগ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।
মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন ১৭ কোটি মানুষের দেশে ১৮ কোটি সিম.. আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব এটা আমার শ্লোগান। আমরা চাই মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে, আমরা ভিক্ষা করে চলব না। জাতির পিতা শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করেছিলেন। ধ্বংসস্তুপ থেকে যাত্রা করেছিলেন, এক টাকা রিজার্ভ ছিল না। আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। আমি শেখ মুজিবের কন্যা। দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যাব না।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে প্রচুর অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। জনগণ কিছু না পেলেও তারা মানি লন্ডারিং করে প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এফবিআই সাক্ষী দিয়ে গেছে। তাদের কারণেই দেশে ইমার্জেন্সি হলো। আমাকেই প্রথম জেল খাটতে হলো। তারা আন্দোলন করুক, আমাদের কোনও আপত্তি নেই।
সোমবার (২ অক্টোবর) লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার সময় সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথাগুলো বলেন।
অগ্নি সন্ত্রাস করে মানুষকে হত্যা আর দেশের সম্পদ ধ্বংস করাই বিএনপির আন্দোলন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। আন্দোলনের নামে তারা যদি দেশের মানুষকে আবার অত্যাচার করতে চায় তাহলে তাদের কোনও ছাড় নেই। যেকোনও মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
সংবর্ধনা সভায় যোগ দিতে আগে থেকেই জড়ো হতে শুরু করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। লন্ডনের বাইরের দূরদূরান্তের শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকেও এই সভায় যোগ দিতে আসেন অনেকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্স বিএনপির আমলে দেশে পৌছিত ৪.৮বিলিয়ন ডলার, এখন ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২৪.০৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে রেমিটেন্স সঠিকভাবে পৌঁছাবে, তাছাড়া দেশের কাজেও লাগবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, সিলেট আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর আমরা করে দিয়েছি। সিলেটের রেল স্টেশনও আওয়ামী লীগ করে দিয়েছে। আর সিলেটের রেল যোগাযোগের উন্নতি আমরা করে দিয়েছি। এভাবে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে পেরেছি আমরা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে গত ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৭৮তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছান তিনি। ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানের সময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন তিনি।
গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমান হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে (বিজি-২০৮) লন্ডন ত্যাগ করবেন। ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।




