‘এই সরকার না থাকলে ডিসি-এসপিদের চাকরি থাকবে না’
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯:৪০:২৭ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: এই সরকার না থাকলে ডিসি-এসপিদের চাকরি থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন। স্থানীয় গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারের এই ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোকন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক ও মহানগর কৃষকলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের অনুসারী বলে পরিচিত।
সাক্ষাৎকারে কাউন্সিলর খোকন বলেন, ‘মেয়র কয়, এসপি-ডিসি তার কথা শোনে না। শুনব কেন? আপনারে পাশ করাইলে কী লাভ হয় দেশের? ডিসি-এসপিরা জানেন এ সরকার না থাকলে তাদের চাকরি থাকবে না।’
মেয়র আইভীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কিছু হলেই বলে থাকেন শামীম ওসমান চাঁদাবাজি করেন। তাহলে আমার প্রশ্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের এতো উন্নয়নের টাকা কই যায়। আর উন্নয়ন করলে লাভ হবে না, এই লাভ কই যায়? আজ আমরা টাকা পাই না, খাইতে পারি না সরকারি দলে থেকেও। আর এখানে ঠিকাদাররা যারা একসময় ভাত খাইতে ভাত পায় নাই তারা এখন হ্যারিয়ার গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। উনি যে মানুষের চাঁদাবাজি নিয়ে কথা বলে তাহলে সিটি কর্পোরেশনের এতো অর্থ কই যায়।
কাউন্সিলর খোকন সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ৩৬টা কাউন্সিলরের সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক থাকলে আমরা শামীম ওসমানের রাজনীতি করতাম না, আপনার নেতৃত্বে রাজনীতি করতাম। শামীম ওসমান এ কথা শুনলে আমারে বাইর কইরা দিব। অন্যান্য আওয়ামী লীগের নেতারা বাংলাদেশে থাকতে পারলে শামীম ওসমানও থাকতে পারবে। আমি তো আগে নিজে বাঁচব। দেশ ছেড়ে পালায় বা আত্মগোপন করে কারা, যাদের কারও সঙ্গে কোনো লিয়াজোঁ নেই।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন বলেন, তার সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। নাসিকের ৩৬ কাউন্সিলর করোনার সময় অনেক কাজ করেছিল। বর্তমানে ডেঙ্গু মহামারীতেও কাউন্সিলররা এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাজ করছেন। এটার বাহবা মেয়র পাবেন। আমরা এতো পরিশ্রম করার কারণেই তিনি এতো সম্মানিত। উনি টাকা আনেন সরকারের কাছ থেকে, নিজের পকেট থেকে তো খরচ করেন না। জনগণ ট্যাক্স দেয়। উনি শুধু পরিচালনা করে। উনি বাজেট অধিবেশনের দিন তারিখটাও আমাদের জানায় নাই।
খোকন বলেন, আগের বাজেটে গিয়ে দেখলাম উনার কিছু নিজস্ব মানুষ আছে তাদের দিয়ে প্রশ্ন করায়। ফুটপাত নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তারপর সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে বকাঝকা করে অধিবেশন শেষ করেন। বছরের একটা বাজেট। তিনি কখনো বলতে পারবে না আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে বাজেটের তারিখ ঠিক করেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মানে আমার কর্পোরেশন। উনি মনে করে সিটি কর্পোরেশন তার। এটার মধ্যে কাউন্সিলর বলতে কোনো শব্দ নাই।
তাই আমি কিছুদিন আগে ফেসবুকে লিখেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোরালো অনুরোধ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে কাউন্সিলরবিহীন করতে। মানে কোনো কাউন্সিলরের দরকার নাই। কারণ আমি জানি উনি দক্ষ প্রশাসক। আমাদের কাউন্সিলর পদ বিলুপ্ত করে দেওয়া হোক। আমার আর কোনো ভয় নাই কথা বলতে। আমি যতদিন বেঁচে আছি সত্য কথা বলে যাবো। উনি আমাদের সঙ্গে যা আচরণ করে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি তো একজন কাউন্সিলর, উনার কর্মী নই। একটা কথা বললেই উনি ধমক দিয়ে বসেন। তাই আমি এ কারণে নগর ভবনে যাই না। আর তাতে সেও অনেক খুশি। ৩৬ জন কাউন্সিলর না গেলে সে একা মনের মতো সিটি কর্পোরেশন চালাবে। উনি শুধু আমার সঙ্গেই নয়, আরও অনেক কাউন্সিলর রয়েছেন তাদের সঙ্গেও ধমক দিয়ে কথা বলেন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়।