বৈশ্বিক উষ্ণতা: পেঙ্গুইন চিরতরে বিলুপ্ত হবে, ১০ হাজার মৃত্যু
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ৯:৪৩:১৭ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভাঙতে শুরু করেছে অ্যান্টার্কটিকার বরফ। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে সেখানকার জীববৈচিত্র। ইতোমধ্যে ১০ হাজার পেঙ্গুইনের মৃত্যু ঘটেছে সেখানে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পানিতে সাঁতারোপযোগী জলরোধী পালক গজানোর আগেই পেঙ্গুইনের ছোট ছোট ছানাগুলোর পায়ের নিচের বরফ গলে তা ভাঙতে শুরু করে। ফলে হয় পানিতে ডুবে কিংবা বরফ-ঠাণ্ডা পানিতে জমে ছানাগুলো মারা যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে ২০২২ সালের অ্যান্টার্কটিকার পশ্চিমে, বেলিংশাউসেন সাগরের সম্মুখভাগে। স্যাটেলাইটের ছবিতে সে দৃশ্য ধরা পড়েছে।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং বৃদ্ধি ও দূষণ অ্যান্টার্কটিকার জীববৈচিত্র্যকেও চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে। বরফাচ্ছাদিত এই মহাদেশটির ৬৫ শতাংশ প্রাণীই বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। তালিকায় রয়েছে মহাদেশটির প্রধান আকর্ষণ পেঙ্গুইনও। সম্প্রতি এক প্রখ্যাত মার্কিন সংবাদমাধ্যম এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি বায়োলজি জার্নাল জানিয়েছে– গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ন্ত্রণে না আনা গেলে চলতি শতকের শেষের দিকে অ্যান্টার্কটিকার সম্পদ পেঙ্গুইন-সহ মহাদেশটির ৬৫ শতাংশ স্থানীয় প্রজাতিই সম্ভবত বিলুপ্ত হয়ে যাবে!
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অ্যান্টার্কটিকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা কাজে আসছে না। গবেষকরা এবার অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়ার উপর জোর দিচ্ছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে অ্যান্টার্কটিকার কোনো অবদান নেই। জনবসতিহীন মহাদেশটির প্রাণীজগতে এই বিপদ নেমে আসার জন্য এই ভূখণ্ডের বাইরের মানুষই দায়ী।’
তিনি আরও বলেন, অ্যান্টার্কটিকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে চাইলে আমাদের উচিত সকলে মিলে আগে উষ্ণতা কমানো। পাশাপাশি, স্থানীয় ও আঞ্চলিকভাবে পরিবেশ সংরক্ষণও করতে হবে।
তবে সব চেয়ে যেটা দুঃখিত করেছে এই খবরে সেটা হল, অ্যান্টার্কটিকায় ‘সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা’ প্রজাতির তালিকাটির একেবারে শীর্ষে পেঙ্গুইন। বিশ্বের এই অপরূপ সামুদ্রিক প্রাণীটি চলতি শতকের মধ্যেই পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পেঙ্গুইনের বংশবৃদ্ধি ৮০ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অ্যান্টার্কটিকায় মানুষের উপস্থিতি দিনে দিনে বাড়ছে। সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা বাড়াতে নানা পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হচ্ছে। একটি তথ্য বলছে, ১৯৯০ সালের পরে অ্যান্টার্কটিকায় পর্যটন বেড়েছে ৮ গুণেরও বেশি। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির কারণে অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলে যাওয়া হারও বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা সেখানে কার্বন দূষণের প্রমাণ পেয়েছেন। জীবাশ্ম জ্বালানির কালো ধোঁয়া দেখা গিয়েছে। যা অ্যান্টার্কটিকার পরিবেশের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর।
মহাদেশটিকে বাঁচাতে সেখানে মানুষের উপস্থিতিতে ও যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনার কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। তারা সেখানে আর কোনও নতুন পরিকাঠামো না গড়ে তোলার কথাও বলেছেন।




