সিলেট: আখালিয়ার ঘটনা আসলে কী ছিল
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ৫:২৮:২৭ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: সিলেটের আখালিয়ার ধানুপাড়াস্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআন শরিফ পোড়ানোর অভিযোগে রোববার (৬ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে হঠাৎ উত্তাল হয়ে পড়ে এলাকা। শত শত মানুষ উত্তেজিত হয়ে আইডিয়াল স্কুলের ফটকে জড়ো হয়ে তাদের পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারার হুমকি দিতে থাকেন।
পুলিশ এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরানের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যানকে প্রতিষ্ঠানটির একটি কক্ষে আটকে রেখে ক্ষুব্দ জনতার হাত থেকে রক্ষা করে।
বিষয়টি ছিল—
ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে পবিত্র কুরআন কিংবা অন্যান্য ইসলামী গ্রন্থ পুরোনো, ছেঁড়া, ভুলে ভরা অর্থাৎ পাঠ উপযোগী যদি না থাকে সেগুলো সম্মানের সাথে ধ্বংস করে দেয়া যায়।
আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, কলেজে পবিত্র কুরআনসহ দুই বস্তা ধর্মীয় পুস্তক আসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য। আইডিয়াল স্কুলের চেয়ারম্যান ড. নুরুর রহমান এবং প্রিন্সিপাল মাহবুব আলম শিক্ষার্থীদের কাছে বিতরণের আগে দেখেন পবিত্র কুরআন শরিফে অসংখ্য মুদ্রনজনিত ভুল রয়েছে। তখন তারা এগুলো বিতরণ না করে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন।
সে উদ্দেশ্যে তারা পুড়িয়ে পানিতে ভাসিয়ে দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় দুই এক জন লোক দেখে ফেলেন তারপর মোবাইলে এ নিয়ে লাইভ করা হলে মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে।
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও আখালিয়া তপোবন জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ মৌলানা মুফতি নোমান আহমদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পবিত্র কুরআন কিংবা অন্যান্য ইসলামী গ্রন্থ পুরোনো, ছেঁড়া, ভুলে ভরা অর্থাৎ পাঠ উপযোগী যদি না থাকে সেগুলো সম্মানের সাথে তিনটি পদ্ধতিতে ধ্বংস করে দেয়া যায়। ১.মাটিতে পুতে রাখা যায় ২. পানিতে ভাসিয়ে দেয়া যায় ৩. পানিতে ভাসিয়ে দেয়ার পর অবমাননা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে পুড়িয়ে ছাই করে পানিতে ভাসিয়ে দেয়া। তিনি বলেন, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যান অত্যন্ত ধার্মিক মানুষ। তারা কুরআন শরিফ পুড়ানোর মতো ন্যাক্কারজনক কাজ করতে পারেন না। তাঁরা যা করেছেন তা পবিত্র কুরআন শরিফের মর্যাদা রক্ষার জন্য করতে চেয়েছিলেন । তবে তাদের এই কাজটি এভাবে প্রকাশ্য করা সঠিক হয়নি।
এদিকে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী জানান, কুরআন শরীফ পোড়ানোর জন্য ঘটনাস্থল থেকে ২জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সাথে পুলিশ পোড়ানো কুরআন শরীফ উদ্ধার করেছে। সেই সাথে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।




