দীর্ঘ জীবনের মূলমন্ত্র জানালেন ১০১ বছরের নারী

১০০তম জন্মদিন পালনের সময় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে একটি অভিনন্দন চিঠিও পেয়েছেন এই শতবর্ষী নারী

অনুপম নিউজ ডেস্ক: দুবাইয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন কানাডিয়ান প্রবাসী ৩১ জুলাই ১০১ বছরে পৌঁছলেন। নিভা চ্যাটার্জি নামের ওই প্রবীণা তাঁর দীর্ঘ জীবনের রহস্য ফাঁস করেছেন।

সবাই আদর করে তাঁকে দিদা বলে ডাকে। নিভা চ্যাটার্জি গালফ নিউজকে জানিয়েছেন – ”আমি ভাল খাই এবং আমার মধ্যে রসবোধ আছে। “বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের মাঝে ১০১ লেখা মোমবাতিতে ফুঁ দিয়ে এবং কেক কেটে জন্মদিন পালন করলেন এই বৃদ্ধা।

নিভা চ্যাটার্জি দীর্ঘ জীবনে অনেক ওঠা পড়া, সুখ দুঃখের সাক্ষী থেকেছেন। এক চোখে এখন ভালো দেখতে পান না তিনি। তা সত্ত্বেও প্রাণশক্তিতে ভরপুর এই বৃদ্ধা গালফ নিউজকে বলেছেন, ”আমার সকাল শুরু হয় দুবাইয়ের সূর্যোদয় দেখে। আমার স্বাস্থ্য এখনো ঠিক আছে।

”মহামারি চলাকালীন দুই বছর আগে তিনি দুবাইয়ে আসেন। কিন্তু সময়টা ভালো ছিল না।

তখন পড়ে গিয়ে গালের হাড় এবং কব্জি ভাঙেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপনই তাঁকে জীবনে এতটা পথ পার করতে সাহায্য করেছে। নিভা দেবী জানাচ্ছেন , ”আমি সবসময়ই তাড়াতাড়ি উঠি এবং তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাই। যতদিন পারতাম, অনেক শারীরিক পরিশ্রম করতাম। ঘর পরিষ্কার করতাম, নিজে রান্না করতাম এবং পরিবারের দেখভাল করতাম। এখন, আমার নাতির জেদের জন্য আমার দুজন হেল্পার আছে এবং তারা আমাকে ঘরের কোনো কাজ করতে দেয় না।” ওয়াকারের সাহায্যে বাড়ির মধ্যেই ঘোরাফেরা করেন তিনি এবং রোদ গায়ে লাগাতে বারান্দায় বসে থাকতে পছন্দ করেন । শুধু তাই নয়, নিয়ম করে প্রতিদিন প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি ওয়াকার নিয়ে হাঁটেন। লিফট ব্যবহার করে বিল্ডিংয়ের নিচে নামেন।

৩ দশক আগে কলকাতার একজন সুপরিচিত ডাক্তার তথা তার প্রয়াত স্বামী ডা. সন্তোষ চ্যাটার্জির সাথে মন্ট্রিলে চলে এসেছিলেন তিনি। নিভা চ্যাটার্জির নাতি জানাচ্ছেন, তার মা, যিনি চ্যাটার্জি দম্পতির একমাত্র কন্যা ছিলেন এবং মন্ট্রিলে নিজের মায়ের যত্ন নিতেন, ২০২০ সালের মে মাসে মারা যান। কিন্তু কোভিড-১৯ দিদার জীবন কেড়ে নিতে পারেনি। এই সবের মধ্যেই তিনি মন্ট্রিল থেকে দুবাই চলে আসেন। ১০০তম জন্মদিন পালনের সময় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে একটি অভিনন্দন চিঠিও পেয়েছেন এই শতবর্ষী নারী।

দিদা কলকাতায় ফেলে আসা দিনগুলিকে এখনো মনে করেন , সেই মধুর স্মৃতি আজ তাঁকে নাড়া দেয়। শতবর্ষী হিসাবে নিভা চ্যাটার্জির বেঁচে থাকার একমাত্র মন্ত্র— ‘পজিটিভ থাকুন এবং আরও বেশি হাসিখুশি থাকুন।’