আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা পালায় না কখনো: প্রধানমন্ত্রী
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০২ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৪:৪৯ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: কথায় কথায় যারা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পথ পাবে না বলে মন্তব্য করেন তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা কখনো পালায় না। পালিয়ে যাওয়ার নজির আওয়ামী লীগের নেই।
তিনি বলেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে শেষ করে দিতে চেয়েও পারেননি। একইভাবে এরশাদ ও খালেদাও এই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কৃষক লীগ। সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি প্রমুখ। শেখ হাসিনা বলেন, মা খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত, ছেলে তারেক জিয়া খুন, অস্ত্র চোরাকারবারি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি মামলার আসামি। সেই আসামি যে দলের নেতা, তাদের মুখে বড় বড় কথা। আমরা নাকি পালানোর পথ পাবো না।
তোরা তো পালাইয়া আছিস। এক পলাতক আসামির তত্ত্বাবধানে এত লম্বা কথা আসে কোথা থেকে? তিনি বলেন, বারবার বাধা এসেছে যেন কোনোমতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারে। তবে আমি বিশ্বাস করিÑ বাংলাদেশের জনগণই আমার মূল শক্তি। বাবা-মা সহ পরিবারের সদস্যদের হারানোর পর বাংলার মানুষই আমাকে আপন করে নিয়েছে। সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সহনশীলতা দেখাচ্ছি। আবার দেখলাম তাদের সেই অগ্নিসন্ত্রাস।
২০১৩, ’১৪ ও ’১৫ সালে তারা যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস, খুন, মানুষ পুড়িয়েছে; ২০০১ সালের নির্বাচনের পর যেভাবে আমার নেতাকর্মীদের অত্যাচার করেছে, আমরা যদি তার এক ভাগ প্রতিশোধ নিতাম, তোদের হদিস পাওয়া যেত না। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাস করিনি। তিনি বলেন, বিএনপি ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার ঘোষণা দিয়ে মাত্র দেড় মাসও থাকতে পারেনি। ৩০শে মার্চ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। ২০০৬ সালের এক কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করে। এই ভোটও বাতিল হয়ে গিয়েছিল। ভোট চুরির কারণে দুইবার যাদের নির্বাচন বাতিল হয়েছে, তাদের মুখে এত লম্বা কথা আসে কীভাবে আমার প্রশ্ন। একটা প্রবাদ আছে, চোরের মায়ের বড় গলা। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমানের ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ই আগস্টের সময় আমি এবং আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। জিয়াউর রহমান আমাদের আসতে বাধা দিয়েছে। শেখ রেহানার পাসপোর্টটাও রিনিউ করে দেয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে আমার অবর্তমানে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আমরা অনেক বাধা অতিক্রম করে দেশে ফিরে আসি। ১৯৮১ সালে দেশে আসার পর জিয়াউর রহমান আমাকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। আমি যে আমার মা-বাবা, ভাই বোনের জন্য দোয়া করবো, মোনাজাত করবো, সে সুযোগটাও দেয়নি। রাস্তার উপর বসেই আমাকে আমার মা-বাবার জন্য দোয়া পড়তে হয়েছিল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের যেকোনো মানুষ তার আপনজন খুন হলে বিচার চায়, আর আমরা যারা ১৫ই আগস্ট আপনজন হারিয়েছি, আমাদের বিচার চাওয়ার কোনো অধিকারই ছিল না। মামলা করার অধিকার ছিল না। খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসের চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশটাকে একটা কারাগারে পরিণত করেছিল, প্রতিরাতে কারফিউ, মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা ছিল না, কথা বলার অধিকার ছিল না, সাদা মাইক্রোবাসে কেউ প্রতিবাদ করলেই তুলে নিয়ে যাওয়া হতো, আর কোনোদিন তার লাশও খুঁজে পাওয়া যেত না। আমাদের বহু নেতাকর্মী এভাবে হারিয়ে গেছে। শুধু আমাদের না, সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছে, বিমান বাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছে, তাদের আত্মীয়স্বজনের লাশও দেখতে পায়নি। এ সময় দেশের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, কৃষিখাতে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। ছিয়ানব্বই সালে আমরা যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আমার সঙ্গে লম্বা একটা তালিকা নিয়ে বসেন। তাদের অনেক প্রস্তাব- এই করতে হবে, ওই করতে হবে। আমি শুধু বলেছিলাম দেশটা আমাদের, কী করতে হবে আমি জানি। দেশের মানুষের জন্য কোথায় কীভাবে কাজ করতে হবে সেটা আমার জানা আছে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। বিদ্যুৎ চাচ্ছিল সেচের জন্য, সেটা খালেদা জিয়ার কাছে অপরাধ ছিল। গুলি করে তাদেরকে মারে। আমি ছুটে গিয়েছিলাম সেখানে, প্রতিটি পরিবারকে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমরা সবসময় মানুষের পাশে থাকি, মানুষের জন্য কাজ করি।




