রাজনৈতিক সংকট: সমঝোতার উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের নাকি সরকারের উপর চাপ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুন ২০২৩, ১১:২১:১৭ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: দেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে শিগগিরই ঢাকা সফরে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারসংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া, অর্থনৈতিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজ এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
উদ্ভূত সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ উল্লেখযোগ্য দলগুলো এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনা করে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাবে এ চৌকশ টিম। সফরটি শুরু হবে ১০ জুলাই থেকে এবং ১৩ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
এদিকে মার্কিন এ প্রতিনিধিদলের সফর নিয়ে জনমনে নানা কৌতূহল দেখা দিয়েছে। তবে অনেকের আগ্রহ ঘুরপাক খাচ্ছে ডোনাল্ড লুকে ঘিরে। কারণ, পাকিস্তানে ইমরান খান সরকারকে অপসারণে ডোনাল্ড লুর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকারকে হটানোর জন্য দেশটির ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সরাসরি ডুনাল্ড লুকে দায়ী করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্রসহ নানা ইস্যুতে প্রশ্ন তুলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস এবং ১২ জন কংগ্রেসম্যান কড়া চিঠি ও বিবৃতি দিয়েছে। বিপরীতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে দফায় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করা হয়। এর ফলে পররাষ্ট্র নীতির আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে একধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধিদলের সফর চূড়ান্ত হওয়ায় নানামুখী গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অব্যাহতভাবে যুক্ত আছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহুবিধ সম্পৃক্ততা রয়েছে। এসব বিষয় আলোচনা করার জন্য তারা এবার বাংলাদেশ সফরে আসছেন।’
একটি সূত্র জানায়, মার্কিন প্রতিনিধিদলের এবারের সফরের এজেন্ডায় মূলত নির্বাচন, গণতন্ত্র প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন দেখতে চায় না। এ কারণেই সমঝোতার চেষ্টা চালাবে। রাজনীতি ও নির্বাচনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট এবং শ্রম অধিকারও গুরুত্ব পাবে এ আলোচনায়। বাংলাদেশ সরকার অবশ্য রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বিদেশি হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। ফলে এর মধ্যে কীভাবে আলোচনা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, এই রাজনৈতিক সমঝোতার নামে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধিদলের সফর পরোক্ষভাবে সরকারের ওপর প্রবল স্নায়ুচাপ তৈরি করবে।
বিশেষত, অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সমঝোতা উদ্যোগের এই আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। মূলত সংকট নিরসনে এ আলোচনা উদ্যোগটি ভূ-রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়। কেননা যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থ ও উদ্দেশ্য হাসিল করতে এভাবে সরকারের ওপর নানামুখী চাপ অব্যাহত রাখবে।