টাইটানের ৫ আরোহী মারা গেলেন চোখের পলক ফেলার গতির চেয়েও কম সময়ে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুন ২০২৩, ১১:১০:৪৫ অপরাহ্ন
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পানির প্রচণ্ড চাপে আটলান্টিকের তলদেশে তছনছ হয়ে যায় সাবমেরিন ‘টাইটান’।
সাগরের এত গভীরে সাবমার্সিবলের খোলসে সামান্য ফাটল দেখা দেয়ায় মুহূর্তেই অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়ে থাকতে পারে ডুবোযানটি, বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ভয়ানক এই চাপে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া টাইটানের আরোহীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রাণ হারান বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
বিখ্যাত জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে সাগরের অতলে ডুব দেয়া সাবমার্সিবল টাইটান যাত্রা শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টা পরই হারিয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সব যোগাযোগ। ব্যাপক তল্লাশির পর এটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায়।
পানির অস্বাভাবিক চাপ সহ্য করতে না পেরে অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া সাবমার্সিবলের আরোহীদের করুণ মৃত্যু হয়। সাগরের গভীরে পানির চাপে একটি ডুবোযান কীভাবে দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং এর আরোহীদের পরিণতিই বা কী হতে পারে তা ব্যাখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাবমার্সিবলটি যে গভীরতায় নীচে নেমেছিল, সেখানে পানির চাপ সমুদ্র পৃষ্ঠের চেয়ে প্রায় ৪শ গুণ বেশি। আটলান্টিকের ১৩ হাজার ২০০ ফুট গভীরে নামার সময় সমুদ্রের অতল জলরাশির ভয়াবহ চাপে ডুবোজাহাজটির কার্বন ফাইবারের তৈরি খোলসে যদি সামান্যতম ফাটল দেখা দেয়, তাহলেও তাৎক্ষণিকভাবে এটি অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, পানির ভয়ানক চাপে দুমড়ে-মুচড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়ার এই ঘটনা চোখের পলক ফেলার গতির চেয়েও কম সময়ে ঘটে যায়।
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে আটলান্টিকের সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে। ওশান গেটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সমুদ্রের ১৩ হাজার ফুট গভীর পর্যন্ত নামতে সক্ষম টাইটান। কিন্তু সমুদ্রের জলরাশির বিপুল চাপ সহ্য করে এত গভীরে নামার মতো প্রযুক্তি টাইটানে ছিল কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকের।
অনেক গবেষকের দাবি, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে টাইটান পৌঁছেছিল ঠিকই, কিন্তু আর উপরে উঠে আসতে পারেনি। তাদের ধারণা, যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে কোথাও আটকে গিয়ে থাকতে পারে টাইটান। এতে ফেটে যায় এর খোলস, যার কারণে পানির তলদেশে প্রচণ্ড চাপে মুহুর্তেই দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল সাবমার্সিবলটি।
ভয়ানক এই চাপে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ডুবোজাহাজের আরোহীদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা-ও ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মানবদেহের এত চাপ সহ্য করার ক্ষমতা না থাকার ফলে শুরুতেই ভয়াবহ চাপ পড়ে দেহের ওপর, বেড়ে যায় রক্তচাপ, ঘটে অর্গান ড্যামেজ। এছাড়া নাইট্রোজেন নার্কোসিস, অক্সিজেন টক্সিসিটি এবং হাইপোথার্মিয়ার শঙ্কা তো আছেই।
তবে ঘটনা এতই দ্রুত ঘটবে যে ডুবোযানের আরোহীরা এ সময় কোনো ব্যথা অনুভব করার মতো সময়ও পাবেন না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।