হজ ও জিলহজের প্রথম দশকের ফজিলত
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৩, ৩:২৬:১০ অপরাহ্ন
আহমদুল ইসলাম চৌধুরী
চান্দ্রমাসসমূহের বিভিন্ন সময়ের ফজিলত রয়েছে। তন্মধ্যে রমজানের শেষ দশক ও জিলহজ মাসের প্রথম দশক উল্লেখযোগ্য। জিলহজের শেষ দশকের মধ্যে নবম দিবস আরাফার দিনে নফল রোজা রাখা, দশম দিবসে কুরবানি করা উত্তম। হজের ক্ষেত্রেও আরাফাতের পরের দিন দশম দিবসে হজযাত্রীর কষ্টসাধ্য আমল রয়েছে। যথা: রমি করা, দমে শুকরিয়া তথা হজের কুরবানি করা।
সারা বিশ্ব থেকে ২৬ লাখ মুসলিম নর-নারী পবিত্র মক্কায় একত্রিত হতে থাকবেন জিলহজ মাসের শুরু থেকে। দুই টুকরো সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরিধান তথা এহরাম অবস্থায় ৯ জিলহজ আরাফায় উপস্থিত হবেন। হজের তিন ফরজের মধ্যে প্রধান ফরজ ৯ জিলহজ আরাফায় অবস্থান। পরদিন ১০ জিলহজ হজে কষ্টসাধ্য গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো বড় শয়তানকে পাথর মারা, দমে শুকরিয়া তথা হজের কুরবানি করা। মাথার চুল ফেলে এহরামমুক্ত হওয়া। অতঃপর পবিত্র মক্কায় গিয়ে ফরজ তাওয়াফ ও সায়ী করা।
অন্যদিকে উম্মতে মুহাম্মদির জন্য ৯ জিলহজ আরাফাতের দিন রোজা রাখাটা অত্যধিক ফজিলতপূর্ণ। এই রোজার বদৌলতে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে গত বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। আরো মাফ করে দেবেন আগামী এক বছরের গুনাহ। আগামী এক বছর হয়তো হায়াত না থাকলে তার আমলনামায় এর সওয়াব দিয়ে দেবেন। অবশ্য ১ থেকে ৯ জিলহজ পর্যন্ত সক্ষম হলে রোজ রাখতে পারাটা অতীব উত্তম। অন্ততপক্ষে অতি আমল করতে না পারলেও গুনাহ না হয় এমনভাবে সাবধানে থাকা।
১০ জিলহজ ঈদের জামাত এবং আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তির জন্য কুরবানি করার নিয়ম। মুসলিম উম্মাহর জন্য ১ জিলহজ থেকে কুরবানি না করা পর্যন্ত মাথার চুল, নখ ইত্যাদি না কাটা সুন্নত। জিলহজের প্রথম ১০ দিন এবং কুরবানির পরে আরো দুই দিন তাকবিরে তাহমিদ-তাহলিল পাঠ করার গুরুত্ব রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মহান সাহাবা হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এবং হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর এই আমল নিয়ে অত্যধিক আমল করার পাশাপাশি বাজারে গিয়ে উচ্চ স্বরে পাঠ করতেন যেন তাদের পাঠ করার আওয়াজে বাজারের অন্যরাও পাঠ করতে পারেন।
হজযাত্রীগণ পবিত্র মক্কায় গমন করে জিলহজের প্রথম দশক হজের আমল করবেন। অন্যদিকে দেশে তথা বিশ্ব মুসলিম জিলহজের প্রথম দশক বেশি বেশি ইবাদত করবেন। গুনাহ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবেন। ৯ জিলহজ আরাফার দিন রোজা রাখবেন। ১০ জিলহজ ঈদুল আজহার নামাজ পড়বেন। আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা কুরবানি করবেন। ঈদের পর দুই দিন পর্যন্ত তাকবিরে তাহমিদ-তাহলিল পাঠ করবেন।
বস্তুত পবিত্র কুরআন ও পবিত্র হাদিসের আলোকে জিলহজ মাসের প্রথম দশকের ১০টি আমলের কথা উল্লেখ রয়েছে। যথা: ১. অত্যধিক পরিমাণে মহান আল্লাহ পাককে স্মরণ করতে থাকা। ২. বেশি বেশি নেক আমল তথা ভালো কাজের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হওয়া। ৩. সামর্থ্যবান হলে হজ করতে গমন করা। ৪. আর্থিক সামর্থ্য থাকলে কুরবানি করা। ৫. কুরবানি করা ব্যক্তিগণ নখ, চুল ও অবাঞ্ছিত লোম কর্তন না করা। ৬. বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এই ১০ দিন পাপ না হওয়ার মতো সতর্ক থাকা। ৭. অধিক পরিমাণ তাকবিরে তাহমিদ ও তাহলিল পাঠ করা। ৮. ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত তাকবির পাঠ করা। ৯. ৯ জিলহজ আরাফাতের দিন রোজা রাখা। ১০. ঈদুল আজহার দিন সুন্নতসমূহ পালন করা।