আগাম বন্যার আশঙ্কা, বোরো ধান কাটতে মাইকিং
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ এপ্রিল ২০২৩, ৪:১৩:০৭ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: বোরো ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলে। বিশেষ করে এ সপ্তাহে প্রবল বর্ষণ এবং আগাম বন্যার আশঙ্কায় কৃষকরা বসে না থেকে ধান পেকে যেতেই ধান কাটা শুরু করে তা মাঠেই শুকিয়ে বিক্রি করছেন এবং ছোট ছোট ট্রলিতে করে বাসা বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছেন।
আগাম বন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য এবং কৃষি বিভাগ থেকে মাইকিং করার কারণে ধান একটু আগাম কেটে ফেলা হচ্ছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত হাওর উপজেলাগুলোর বোরো ধানের প্রায় ৬০ ভাগ কাটা হয়ে গেছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। আর সব মিলে সারা জেলায় কাটা হয়েছে ৪০ ভাগ। নেত্রকোনার হাওরে আবাদকৃত জমির পরিমাণ হচ্ছে ৪০ হাজার ৯৭০ হেক্টর। গতকাল বুধবার পর্যন্ত হাওর উপজেলাগুলোতে ধান কাটা হয়েছে ২৫ হাজার ৪০২ হেক্টর। আগামী সাত-আট দিনের মধ্যে হাওরের বাকি ধান কাটা শেষ হবে বলে কৃষি বিভাগ জানায়। ঈদের মধ্যে ধান বিক্রি করতে পেরে কৃষকরা খুব খুশি।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এ সপ্তাহে প্রবল বর্ষণ হতে পারে এমন খবর পাওয়ার পরপরই কৃষকদের হাওরের পাকা ধান কর্তণের কথা বলা হয়। কৃষকরা সেভাবেই কাজ করছে। তবে প্রচণ্ড রোদ থাকায় এবার ধানও পেকেছে তাড়াতাড়ি। গত ১৫ দিন যাবৎ প্রচণ্ড রোদ ছিল এই হাওরাঞ্চলে। এতে করে বোরো জমির ধান দ্রুত পেকেছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, হাওরের বোরো ধান কাটার জন্য এখন নিয়মিত, অনিয়মিত এবং বহিরাগত মিলে প্রায় ১৬ হাজার ৬৭৫ জন শ্রমিক ধান কাটছেন এবং সেই সঙ্গে ৭৩০টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনও ধান কাটছে। এতে করে আগাম বন্যা এলেও বোরো ধানের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। খারিয়াজুরির রসুলপুরের কৃষক শামসুজ্জামান এবং মেন্দিপুরের কৃষক হারাধন সরকার বলেন, এবার সব ধান তারা ঘরে তুলতে পারছেন। বিশেষ করে রোদ থাকাতে তারা ধান শুকাতেও পারছেন।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, এবার নেত্রকোনা জেলার ৯টি উপজেলায় ২০৬টি ফসল রক্ষা বাঁধ যথা সময়ে সংস্কার এবং মেরামত করায় আগাম বন্যার পানি বোরো ধানের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এছাড়া এবার ধানও কাটা হয়ে যাচ্ছে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, হাওর উপজেলার ধান কাটা শুরু হয়েছে ব্যাপকভাবে। এখন আবহাওয়া এবং পরিবেশ অনুকূলে রয়েছে। ইতিমধ্যে হাওরের অর্ধেকের বেশি জমির বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। ফসল রক্ষা বাঁধগুলো যথা সময়ে সংস্বার করা হয়েছে। কৃষকরা যথাসময়ে পর্যাপ্ত সার পেয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, জেলার পাঁচটি হাওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং কৃষি অফিসারদের বোরো ফসল কর্তন এবং সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।