নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম অগ্নিকাণ্ডের বড় কারণ
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১:২৬:৪৩ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: এমনিতেই দেশে শুষ্ক মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডের প্রবণতা বেশি। এখন চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডের বড় কারণ– নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবহার।
এখন বিপণিবিতানগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এত চাপ নিতে না পারায় ঘটছে বিপর্যয়।
এ ছাড়া বেশিরভাগ স্থানে নেই অগ্নিনিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিছু দিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ঘটেই চলেছে। সোমবার ঢাকায় পাঁচটিসহ সারাদেশে অন্তত ২৩টি আগুনের ঘটনা ঘটে। এর আগে গত শনিবার ঢাকার নিউ সুপারমার্কেটে আগুন লাগে। এতে আড়াইশর বেশি দোকান পুড়ে যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নবাবপুরে টিনশেড গুদামে আগুন লাগে। ৪ এপ্রিল ভোরে গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে পাঁচ মার্কেটের প্রায় পাঁচ হাজার দোকান ভস্মীভূত হয়। ক্ষতি হয় দেড় হাজার কোটি টাকার।
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান (অব.) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের বাসা-অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিম্নমানের হয়। উচ্চ তাপ ও অতিরিক্ত চাপে এগুলো থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হচ্ছে। কোনো কোনো সময় সিলিংয়ের ভেতর দিয়ে তার নেওয়া হয়, তাপে অনেক সময় তা গলে যায়। ইউপিএসসহ নানারকম বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবহার বেড়েছে। তবে সেগুলো যথাযথভাবে দেখভাল বা নির্দিষ্ট সময় পরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। এসব থেকে বৈদ্যুতিক গোলযোগ ঘটে। আর আমাদের বেশিরভাগ বিপণিবিতান বেশ পুরোনো।
সামান্য সংস্কার করে সেগুলো চলছে। এসব জায়গায় আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ফলে আগুন লাগলে তা বড় আকার ধারণ করে। তাছাড়া আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন– সবখানেই এখন সিনথেটিক জিনিসপত্রের ব্যবহার বেড়েছে। এগুলো দাহ্যবস্তু হওয়ায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ছে। আবার অনেক সময় অসৎ উদ্দেশ্য থেকে কোনো স্বার্থসিদ্ধির জন্যও আগুন লাগানো হয়।
অগ্নিকাণ্ড ঠেকাতে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, অগ্নিনিরাপত্তা খাতে কেউ বিনিয়োগ করতে চায় না। অথচ জীবন ও মালপত্র রক্ষায় এটি খুব জরুরি। বিপণিবিতান বা আবাসিক ভবনে আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে। নিরাপত্তা কর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে, মাঝেমধ্যেই অগ্নিনির্বাপণ মহড়া দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর বৈদ্যুতিক সংযোগ ও সরঞ্জাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।