সুলতানাকে আটকে জড়িত র্যাব সদস্যদের অপসারণের নির্দেশ হাইকোর্টের
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ২:২৯:২২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবশ্যই জনগণের জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার রক্ষায় কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান “আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার”, “জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার” এবং “গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ” নিশ্চিত করেছে। নাগরিকদের এই মৌলিক অধিকারগুলো কোনোভাবেই লঙ্ঘন করা যাবে না।’
নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে কোনো মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। গত ২২ মার্চ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে তাকে আটক করে র্যাব। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।
পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। নওগাঁর জেলা জজ পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অন্তর্ভুক্ত করে ওই কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে সুলতানাকে আটকে অংশ নেওয়া র্যাব সদস্যদের অপসারণ করে বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে বদলি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে কোনো মামলা ছাড়া র্যাবের হাতে সুলতানা জেসমিনের আটকের ঘটনা কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
রুলে সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেওয়া র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিকের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ ও রুল জারি করেন।
সুলতানার মৃত্যু বিষয়ক গত ২৭ মার্চ প্রকাশিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদন হাইকোর্টের এই বেঞ্চে তুলে ধরেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। সেদিন শুনানি নিয়ে আদালত সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্ত (পোস্টমর্টেম) প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য দেখতে চান। রাষ্ট্রপক্ষকে ২৮ মার্চ এসব কাগজপত্র ও তথ্য দাখিল করতে বলা হয়। পাশাপাশি পত্রিকার খবর আদালতের নজরে আনা আইনজীবীকে লিখিত আবেদন প্রস্তুত করে নিয়ে আসতে বলা হয়। এ অবস্থায় র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিচারিক তদন্ত চেয়ে মনোজ কুমার ভৌমিক গত ২৮ মার্চ ওই রিটটি করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন রিট আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, ‘সরকার এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ায় আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয়।’




