সিলেটে টাইগারদের সিরিজ জয়
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০২৩, ৬:৫৮:১৯ অপরাহ্ন
সিলেট অফিস: বৃষ্টি একটা বাড়তি সুযোগ তৈরী করে দিলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেনি আইরিশরা। বৃহস্পতিবার সিলেটে ১০ উইকেটের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করার পাশাপাশি একটা রেকর্ডও গড়েছে টাইগাররা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে তামিমের দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৮ ওভার ১ বলে ১০১ রানে অলআউট হয়েছিল আয়ারল্যান্ড। যেখানে সর্বোচ্চ ৩৬ রান এসেছিল ক্যাম্পারের ব্যাট থেকে। জবাবে তামিম-লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩ ওভার ১ বলে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই নির্ভার ছিল বাংলাদেশ। যার ছাপ দেখা গেছে তাদের ব্যাটিংয়েও। পুরো সিরিজ জুড়ে রান খরায় ভুগতে থাকা তামিম ইকবাল এদিন ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন। অপর প্রান্তে লিটন দাসও দুর্দান্ত শুরু করেন। এই ওপেনারও চার হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেন।
দুই ওপেনারের ব্যাটে ৭ ওভারের আগেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। একই গতিতে শতকও পেরোয় টাইগাররা। এমন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তামিম ইকবাল। ১৩ ওভার ১ বল খেলে বিনা উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১০১ রানের অবিছিন্ন জুটিতে ৪১ রানই এসেছে অধিনায়কের ব্যাট থেকে। আর লিটন অপরাজিত থেকেছেন ৫০ রান করে।
এর আগে ইনিংসের শুরু থেকেই বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদের বোলিং তোপের মুখে পড়ে আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মিডিয়াম এই পেসার। দলীয় ১২ রানে হাসান মাহমুদের বলে ব্যাটের কোনায় লেগে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন স্টিফেন দোহানি। ২১ বল খেলে ৮ রান করে বিদায় নেন এই ওপেনার।
এরপর ইনিংসের নবম ওভারে আরেক ওপেনার পল স্টার্লিংকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন হাসান মাহমুদ। দলীয় ২২ রানের মাথায় ১২ বলে ৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। একই ওভারের চতুর্থ বলে আইরিশদের টপ অর্ডার হ্যারি টেকটরকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ত্রাস সৃষ্টি করেছেন ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসার।
এরই মধ্যে তাসকিনের বলে একটি এবং হাসান মাহমুদের বলে আরও একটি ক্যাচ মিস হয়। তবে ঠিকই জ্বলে উঠেছেন দেশসেরা পেসার তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের ১০ম ওভারে আইরিশ কাপ্তান অ্যান্ডি বালবির্নিকে প্রথম স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিলে দলীয় ২৬ রান তুলতেই ৪টি উইকেট হারিয়েছে আইরিশরা।
এরপর কার্টিশ ক্যাম্ফার আর লরকান টাকার ৫৭ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে এবাদত হোসেন টানা দুই বলে উইকেট তুলে নিলে আবারও ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১৯তম ওভারে ৩১ বলে ২৮ করা সেট ব্যাটার লরকান টাকারকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করেন এবাদত।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ঠ হয়ে রিভিউ নিয়ে নেন টাকার। তবে কোনো লাভ হয়নি সফরকারীরাদের। সোজা প্যাভিলিয়নের পথে হাটা ধরেন তিনি। পরের বলে জর্জ ডকরেলকে দাঁড়ানোর আগেই বোল্ড করে গোল্ডেন ডাক উপহার দেন এবাদত। একের পর এক উইকেট হারিয়ে অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে আয়ারল্যান্ড।
এরপর ২২তম ওভারে আক্রমণে ফিরে জোড়া শিকার ধরেন তাসকিন। ওভারের প্রথম বলে নাসুমের হাতে ধরা পড়েন অ্যান্ডু ১ রান করা ম্যাকব্রাইন। এক বল পর সাজঘরে ফেরেন মার্ক অ্যাডায়ারও। এই অলরাউন্ডার অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টামে ডেকে এনে বোল্ড হয়েছেন। খেয়েছেন সিলভার ডাক। তাসকিনের জোড়া উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে ইনিংসে বোলিং করা বাংলাদেশের তিন পেসারই জোড়া শিকারের স্বাদ পেয়েছেন। আর তাদের তোপের মুখে ২২ ওভারে ৭৯ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়েছে আইরিশরা।
বাকি ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও এদিন ব্যাতিক্রম ছিলেন ক্যাম্পার। এই অলরাউন্ডার এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে খুব একটা পথ হাটতে পাড়েননি। থামতে হয়েছে ৩৬ রানে। শেষ পর্যন্ত ২৮ ওভার ১ বল খেলে ১০১ রানে অলআউট হয়েছে আয়ারল্যান্ড।