ফেঞ্চুগঞ্জে ইউপি নির্বাচন: মামা-ভাগ্নের লড়াই ঘিলাছড়ায়
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মার্চ ২০২৩, ১০:০৬:০০ অপরাহ্ন
ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি: ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আপন মামা ভাগ্নের লড়াইয়ের কারণে ঘিলাছড়ায় ভোট উৎসবের অন্য রকম ঢেউ দেখা যাচ্ছে।
মামা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে সাইফুল ইসলাম মনা, ভাগ্নে স্বতন্ত্র প্রার্থী রুকুনুজ্জামান চৌধুরী জামায়াতে ইসলামীর মানুষ।
আগামী ১৬ মার্চ ফেঞ্চুগঞ্জে ভোটগ্রহণ। হাকালুকি হাওরের নয়নাভিরাম তীরের কিয়দংশ জুড়ে ঘিলাছড়া একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ। একদিকে সবুজ-শ্যামল বন বৃক্ষ গাছ-গাছালি আচ্ছাদিত ছায়াঘেরা প্রকৃতি, অন্যদিকে বিস্তারিত জলাধার হাকালুকি, যেখানে সদ্য অতীত হওয়া শীতকালে অতিথি পাখিরা আসে বহু দূরের দেশ থেকে।
ঘিলাছড়া ফেঞ্চুগঞ্জের ৩নং ইউনিয়ন। ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এই ইউনিয়নের হাট, ঘাট, মাঠ, পথে, প্রান্তরে চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা। বাড়ি, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্র প্রচারকারীদের আনাগোনা। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে চারপাশ। ভোটারদের মনে বেশ আনন্দ। গত বছরের উদাহরণ টেনে অনেকে এবারও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
ঘিলাছড়ার বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের লেইছ চৌধুরী। বিগত নির্বাচনে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একমাত্র বিজয়ী চেয়ারম্যান ছিলেন। এবারের নির্বাচন থেকে তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাচনে মামা-ভাগ্নের লড়াই শেষে কে হাসবেন বিজয়ের হাসি কেউ জানে না। আওয়ামী লীগ বিজয় ধরে রাখতে চায়। নির্বাচনে দলটির সাংগঠনিক তৎপরতা এমনটাই জানান দিচ্ছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী রুকুনুজ্জামান চৌধুরী জানান, আমি মৌসুমী বাতাসে বেড়াতে আসা কোনো গাংচিল বা অতিথি পাখী নই, গত এক যুগের বেশি সময় ধরে ঘিলাছড়া ইউপিবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের কল্যাণে কাজ করাই আমার লক্ষ্য। তিনি বলেন, তার নেতাকর্মীদের পরোক্ষভাবে নানা হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে নির্বাচন থেকে সরে যেতে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম মনা জানান, আমি জনগণের সেবা করতে চাই। আওয়ামী লীগ আমাকে মনোনীত করেছে। নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি ঘিলাছড়াকে যুগোপযোগী আধুনিক একটি ইউনিয়নে রূপান্তরের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের ব্যাপারে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা যোগ্য ব্যক্তি। জনগণ যাকে যোগ্য মনে করবে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী বলেও জানান।
ঘিলাছড়ায় চেয়ারম্যান পদে আরও যারা রয়েছেন তারা হলেন- সাবেক উপজেলা ও ঘিলাছড়ার চেয়ারম্যান মো. আপ্তাব আলী, আশরাফ আলী খান শীরু, মাওলানা আমিনুর রহমান জুয়েল, আক্তার হোসেন উস্তার, বোরহান উদ্দিন সিন্দু। ঘিলাছড়া ঘাটের বাজারের জয়নাল অবেদীন জানান, বিগত নির্বাচন ছিল অবাধ ও নিরপেক্ষ। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ও নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিল। এ জন্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর কথা তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। এবারের ইউপি নির্বাচনও অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।