পৃথিবীর মানুষ ‘ফারাজ’ দেখার আগে ‘শনিবার বিকেল’ দেখার ব্যবস্থা করে দিতে হবে: ফারুকী
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১:০৪:১২ অপরাহ্ন
অনুপম বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’। এই সিনেমাটি মুক্তির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা চলছে। আজ সিনেমাটি নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপিল কমিটির শুনানির দিন ঠিক করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। গতকাল বিকেলে সিনেমাটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু কথা বলেছেন একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে-
আজ আপনার সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’ নিয়ে আপিল বোর্ডের শুনানি হবে। ছবিটি কী মুক্তির সনদ পাবে?
ছবিটি কীভাবে মুক্তি পাবে, আজ কী হবে তা জানি না। তবে আমি পরিস্কারভাবে বলতে চাই, ৩ ফেব্রুয়ারি ভারতে ‘ফারাজ’ মুক্তির আগেই ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি দিতে হবে। কারণ ‘ফারাজ’ যে ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে, একই ঘটনার অনুপ্রেরণায় অনেক আগে বানিয়েছি ‘শনিবার বিকেল’। ফলে ভারতের ‘ফারাজ’ মুক্তির আগেই ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি পাওয়া উচিত। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, যাই ঘটুক না কেন, বাংলাদেশের মানুষ ৩ ফেব্রুয়ারির আগেই ‘শনিবার বিকেল’ দেখবে। এক ঘণ্টা আগে হলেও দেখবে।
ছবির মুক্তি প্রক্রিয়া কি জানেন না, অথচ আশাবাদী?
আমি এ দেশের নাগরিক। আমি এ দেশের ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার অনুপ্রেরণা নিয়ে ছবি বানিয়েছি। যেটা চার বছর হলো দেশের মানুষ দেখতে পায়নি। অথচ বিদেশি একজন চলচ্চিত্রকারও সেই ঘটনারই চিত্রায়ণ করেছেন। তাঁর নির্মিত সিনেমাটি ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাবে। আমাদের দেশের সিনেমা পাবে না। এটা শুধু দেশের চলচ্চিত্রকারদের আত্মমর্যাদার প্রশ্ন নয়, বাংলাদেশেরও আত্মমর্যাদার প্রশ্ন। আমি ‘শনিবার বিকেল’ নির্মাণ করে কোনো অন্যায় করিনি। তাহলে কেন আটকে থাকবে? পৃথিবীর মানুষ ‘ফারাজ’ দেখার আগে ‘শনিবার বিকেল’ দেখার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যদি এটা দেখার ব্যবস্থা করে না দেওয়া হয়, তাহলে আমি মনে করব, সরকারের সংশ্নিষ্ট দপ্তর দেশের শিল্প-সংস্কৃতির গলা চেপে ধরতে চায়। আমাদের আটকে রাখতে চায়।
কমিটির কাছে আপনার প্রত্যাশা কী
সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা সংবেদনশীল। তাঁরা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবেন আমাদের দেশের এই সিনেমা কে বা কারা আটকে দেশকে হেয় করার চেষ্টা করছে। আপিল কমিটির সদস্যদের মধ্যে অনেক খ্যাতিমান মানুষ আছেন। তাঁদের বিচক্ষণতা দেখার অপেক্ষায় আছি। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার দায়িত্ব কিন্তু তাদের কাছে। কারণ, বাংলাদেশ আজ তাকিয়ে আছে আপিল কমিটির দিকে।
ছবিটি এতদিন আটকে রাখার পেছনে কী কারণ
আমার এই ছবি দেখে ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি সেন্সর বোর্ড সদস্যরা দ্রুত সেন্সর ছাড়পত্র দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। ১০ জানুয়ারি অনলাইনে একযোগে কিছু ধর্মীয় রাজনীতি করা মানুষের লিংকে দাবি করা হলো ‘শনিবার বিকেল’ নিষিদ্ধ করতে হবে। যাঁরা এটা করলেন, তাঁরা কেউই সিনেমাটা দেখেননি। যে ছবি দেখে বোর্ড সদস্যরা সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বললেন, সেই ছবি কেন ১৫ জানুয়ারি দ্বিতীয়বার দেখে ছাড়পত্র দিতে অস্বীকৃতি জানানো হলো? কে তাঁদের বাধ্য করল? এর পর আমরা আপিল করলাম। আপলি কমিটির সভাও হলো ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর পর সাড়ে তিন বছর তারা নিশ্চুপ। আমাদের কিছুই জানাল না। এটা কোন রীতি? ‘শনিবার বিকেল’ নিয়ে গত চার বছরের এই অনিয়ম-দুর্নীতি আজ তারা দূর করবে বলে আশা করি। কারণ, এই দেশ আমাদের সবার।