পাগলা মসজিদের দানবাক্সে নতুন রেকর্ড ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:৫৫:৩৯ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: নতুন রেকর্ড পরিমাণ টাকা কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে তিন মাসের ব্যবধানে পাওয়া গেছে।
এবার ২০ বস্তা টাকা গণনা করে মিলেছে ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা।
শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঐতিহাসিক এ মসজিদটিতে আটটি লোহার দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর বাক্সগুলো খোলা হয়।
এবার তিন মাস ছয়দিন পর শনিবার সকাল ৯টার দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। এসময় বাক্সগুলোতে রেকর্ড ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
টাকা গণনা কাজে সিনিয়র সহকারী কমিশনার অহনা জিন্নাত, শেখ জাবের আহমেদ, সুলতানা রাজিয়া, সহকারী কমিশনার মোছা. নাবিলা ফেরদৌস, মো. মাহমুদুল হাসান, রওশন কবীর, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমানসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১ অক্টোবর ৩ মাস একদিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল। এবার তিন মাস ছয়দিন পর আটটি দানবাক্স খোলা হলো।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শেষে নতুন এই রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেলো।
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন ও উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, অনেক বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদের কাছে থিতু হন। এসময় তাকে ঘিরে আশেপাশের অনেক এসে ভক্তকূল সমবেত হন। পাগলবেশী ওই সাধকের মৃত্যুর পর তার সমাধির পাশে পরবর্তীতে এই মসজিদটি গড়ে উঠে। কালক্রমে মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ নামে পরিচিত পেয়ে যায়।
খরস্রোতা নরসুন্দা নদীতীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ
তবে মসজিদটির সঠিক ইতিহাস কারোর জানা নেই। তবে স্থানীয়দের অনেকের ধারণা- মসজিদটি প্রায় আড়াইশ বছরের পুরনো। এ মসজিদে নারীদেরও নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। তারা মসজিদের ভেতরেই আলাদা করা স্থানে নামাজ আদায় করেন।
মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীরমুক্তিযোদ্ধা শওকত আলীর কাছে টাকা দানের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, পাগলা মসজিদে দান করলে মনের ইচ্ছাপূরণ হয়, এমন বিশ্বাসে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মের লোকজনও এখানে দান করেন।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর এ মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রসারিত হয়েছে মূল মসজিদ ভবন।