শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক লিট ফেস্ট ২০২৩
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:০৯:০১ অপরাহ্ন
আছেন এতে তানজানিয়ার নোবেলজয়ী সাহিত্যিক আবদুলরাজাক গুরনাহ
অনুপম নিউজ ডেস্ক: বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের মিলনমেলা ঢাকা লিট ফেস্ট শুরু হয়েছে। ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মিলনায়তন আর লনের বিভিন্ন সেশন এবং সাহিত্য আড্ডায় কোলাহলমুখর হয়ে উঠেছিল বাঙালির সৃজন ও মননের প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি।
সাহিত্যের রসাস্বাদন ও সেই রস অনুরাগীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক লিট ফেস্ট ২০২৩। এটি ছিল উৎসবের দশম আসর।
উৎসবের রঙে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছিল সাহিত্যের হাটে। করোনা মহামারি শেষে থমকে যাওয়া সাহিত্যাঙ্গন নতুন করে উজ্জীবিত হলো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সাহিত্যিক এবং সাহিত্যানুরাগীদের অংশগ্রহণ ও পদচারণে।
সাহিত্যের এ আসরে অংশগ্রহণকারীরা শোনালেন সাহিত্য নিয়ে তাদের ভাবনা আর বিশ্বপরিমন্ডলে সাহিত্যের অনস্বীকার্য ভূমিকার কথা।
নতুন ভাবনা ও জ্ঞানের আদান-প্রদান করলেন দেশি-বিদেশি কবি, সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ ও লেখকরা। সাহিত্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে দেশি ও বিদেশি সাহিত্যিকরা তুলে ধরলেন নিজেদের। বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন প্রতিভা ও গুণের।
গতকাল সকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে মণিপুরি নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় এবারের উৎসবের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা।
এবারের আসরের উদ্বোধন করেন তানজানিয়ার নোবেলজয়ী সাহিত্যিক আবদুলরাজাক গুরনাহ, ভারতীয় লেখক ও সাহিত্য সমালোচক অমিতাভ ঘোষ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা লিট ফেস্টের তিন পরিচালক ড. কাজী আনিস আহমেদ, সাদাফ সায ও আহসান আকবার।
নোবেলজয়ী সাহিত্যিক আবদুলরাজাক গুরনাহ বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছি। আমি ধারণা করছি এই আয়োজনের মাধ্যমে এমন কিছু দেখব, যা আমি জীবনেও দেখিনি। আমি মনে করি এ আয়োজনের শুরুটা বেশ চমকপ্রদ ছিল।’
অমিতাভ ঘোষ বলেন, ‘এ রকম একটা আয়োজনে এসে আমি সম্মানিত বোধ করছি।’
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘এই আয়োজনের সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় যুক্ত ছিল। মহামারির কারণে এবার হয়তো একটু সম্পৃক্ততা কমেছে। আমি এ আয়োজনের সফলতা কামনা করছি।’
আরও পড়ুন- যেভাবে লেখক হয়ে উঠলেন নোবেল বিজয়ী গুরনাহ
উৎসবের পরিচালক ড. কাজী আনিস আহমেদ বলেন, একজন লেখক যেমন নিভৃতে লেখেন তেমনি একজন বিজ্ঞানী আইসোলেশনে কাজ করেন। এখানে যারা উপস্থিত থেকে অংশ নিচ্ছেন তারা অনেক মূল্যবান। এখানে অনেক আলোচনা, বিতর্ক ও সৃজনশীলতার স্ফুলিঙ্গ দেখা যাবে। আরেক পরিচালক সাদাফ সায বলেন, ‘এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ আয়োজন হয়ে আসছে। কিন্তু মহামারি আমাদের একে অপরের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। আমাদের সঙ্গে বিশ্বের নামকরা লেখকরা অংশ নেওয়ায় আমরা সম্মানিত বোধ করছি।’ কথোপকথনের বৈচিত্র্যময় মিশ্রণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সেশন, শিশু ও তরুণদের জন্য আকর্ষণীয় আয়োজন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, নাটক, সংগীত এবং সাংস্কৃতিক নানা পরিবেশনা থাকবে উৎসবের এবারের আসরে।
উদ্বোধনী দিনে ‘টর্ন এপার্ট’ শিরোনাম সেশনে কথা বলেন সোমালিয়ান ঔপন্যাসিক নুরুদ্দিন ফারাহ, বুকারজয়ী শ্রীলঙ্কান ঔপন্যাসিক শিহান কারুণাতিলাকা এবং বুকারজয়ী ভারতীয় ঔপন্যাসিক গীতাঞ্জলি শ্রী।
আলোচনা পর্ব সঞ্চালনা করেন বারবারা এপলার। এদিন তিন সাহিত্যিককে প্রদান করা হয় জেমকন সাহিত্য পুরস্কার। ‘স্তব্ধতা যারা শিখে গেছে’ কাব্যগ্রন্থের জন্য এবারের জেমকন সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি কামাল চৌধুরী। সম্মাননা ক্রেস্টের সঙ্গে তিনি পেয়েছেন ৫ লাখ টাকার চেক। তরুণ শ্রেণিতে ‘ঘুমিয়ে থাকা বাড়ি’ পা-ুলিপির জন্য জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার পেয়েছেন সাকিব মাহমুদ। আর এ শ্রেণিতে ‘সোনার নাও পবনের বৈঠা’ উপন্যাসের জন্য তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন সাজিদুল ইসলাম। তরুণ এই দুই সাহিত্যিক পেয়েছেন ১ লাখ টাকা করে চেক।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন সংসদ সদস্য ও জেমকন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ। ৮ জানুয়ারি শেষ হবে চার দিনের এ লিট ফেস্ট।