জানুয়ারিজুড়ে তীব্র শীতের আভাস, কাঁপছে অসহায়
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৩৮:৩২ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: দেশের অসহায় মানুষকে শীত ভোগালেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কিনতে পারেনি এখনও কম্বল। কনকনে শীতে নিদারুণ কষ্টে থাকা গরিব অসহায়দের জন্য প্রতি বছর কম্বল কেনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।
গতকাল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তার আগের দিন ছিল ৮.৫ ডিগ্রি। রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু কোথাও তাপমাত্রা ১৪/১৫ হলেও শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তাপমাত্রার চেয়ে শীত বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ উত্তরের হিমেল বাতাস। দেশজুড়ে এমন বাতাস বইতে পারে আরও কয়েক দিন।
এ মৌসুমে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে বলে আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় শীত মোকাবিলায় প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল বলে মনে করেন সংশ্নিষ্টরা। এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, শীত কিংবা শৈত্যপ্রবাহকে দুর্যোগ হিসেবে ধরা না হলেও আমরা নিয়মিত আগাম তথ্য দিয়ে মানুষকে সতর্ক করছি। যখন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ১ হাজার মিটারের নিচে নেমে আসে, কুয়াশার তীব্রতা বেশি থাকে, তখন সাধারণত আমরা ফগ অ্যালার্ট জারি করে থাকি। এ ধরনের সতর্কবার্তার মাধ্যমে মূলত যানবাহন চলাচলে বিশেষ সতর্কতা নিতে বলা হয়। তিনি বলেন, আমরা বারবার সতর্ক করলেও শীত মোকাবিলার মতো প্রস্তুতি দেশের মানুষের থাকে না। এ কারণেই মানুষকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এবার কম্বল কেনার জন্য গত ২৬ অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করা হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক (ত্রাণ) মো. নুরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই দরপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দের আওতায় কম্বল ক্রয়ের দরপত্র করা হয়েছে।’ প্রায় দুই মাস কেটে গেলেও এখনও কম্বল কিনতে পারেনি অধিদপ্তর। এই কম্বল কিনতে দুই দফা রি-টেন্ডারও করা হয়। ঠিক কী কারণে কেনা হলো না এর কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সংশ্নিষ্টরা। অধিদপ্তর কম্বল কিনতে ব্যর্থ হয়ে এখন টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে জেলা প্রশাসকদের কাছে।
এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (ত্রাণ) মো. নুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘কম্বল কেনার প্রক্রিয়া চলছে। কত পিস কেনা হবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। অনেকগুলো প্যাকেজ আছে। ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেছে।’ শীত চলে আসার পরও কম্বল কিনতে এত দেরি কেন এ বিষয়ে এ কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘টেলিফোনে এত কিছু বলা যাবে না। সরাসরি এলে বুঝিয়ে দেব।’
এ ব্যাপারে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান গতকাল বিকেলে বলেন, ‘আমি আজই এখানে যোগ দিয়েছি। সব তথ্য এখন বলা যাবে না। আমি যতটুকু জানি বিভিন্ন জায়গায় বরাদ্দ পাঠানো হয়েছে। উত্তরাঞ্চলসহ যেসব এলাকায় শীত বেশি পড়ছে, সেসব এলাকায় ১০ হাজার পিস করে কম্বল চলে যাবে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, গত ২ জানুয়ারি থেকে ছয় জেলা প্রশাসকের কাছে শীতবস্ত্র কেনার জন্য টাকা পাঠানো হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা, পটুয়াখালী, ফেনী, খুলনা, নীলফামারী ও সাতক্ষীরায় ১০ লাখ টাকা করে পাঠানোর তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া এবার শীতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডার থেকে ৬৪ জেলায় ২৬ লাখ ৩৩ হাজার কম্বল পাঠানো হয়েছে।
সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি শীতার্ত মানুষকে সহায়তায় প্রতিবছর নানা সংগঠন, ব্যক্তি ও গোষ্ঠী এগিয়ে এলেও এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না।




