ঋষি সুনাকের পথে হেঁটেও যদি সরে যেতে হয় লিজ ট্রাস, তাহলে কে..
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ অক্টোবর ২০২২, ২:৩৫:৩২ অপরাহ্ন
৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে ট্রাসের অপসারণের পক্ষে এক সমীক্ষায়
অনুপম আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ক্ষমতা হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। খুব রাজনৈতিক অস্থিরতার পর দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উত্তরসূরি নির্বাচিত হলেন ট্রাস।
কিন্তু বলতে গেলে মাস খানেকের মাথায়ই প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন নতুন এ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেংকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েও পার পাচ্ছেন না তিনি।
লিজ ট্রাসকে সরানোর জন্য তার দলের এমপিরাই চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১০০ জনেরও বেশি পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) লিজ ট্রাসের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি জমা দিতে প্রস্তুত।
লিজ ট্রাস ক্ষমতাচ্যূত হলে কে হবেন পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী? এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলোতে এবং জনগণের আলাপে।
ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের একাংশ এরই মধ্যে অনাস্থা এনেছেন লিজ ট্রাসের বিরুদ্ধে। আর বিষয়টি নিয়ে যতই আলোচনা হচ্ছে, ততই সামনে আসছে ঋষি সুনাকের নাম। ঋষি সুনাক তার সমর্থকদের জানিয়েও দিয়েছেন, প্রস্তাব এলে প্রধানমন্ত্রী হতে ইচ্ছুক তিনি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে লড়ার সময়েই সুনাক বলেছিলেন, “কাটছাঁটের কথা ট্রাস তখন বলছিলেন, তা বাস্তবায়িত হলে সুদের হার দ্রুত বাড়বে এবং বন্ধকি সুদেও তার প্রভাব পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।”
তারপরও লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এবং ক্ষমতায় আসার ৩৭ দিনের মাথায় অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারটেংকে বরখাস্ত করে পূর্বঘোষিত সংক্ষিপ্ত বাজেটের একাংশ ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন। ঋষি সুনাকের পথে হেঁটে করপোরেট করের হার ১৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ফের ২৫ শতাংশ করারও পক্ষপাতী তিনি।
ফলে এই মুহূর্তে ব্রিটেনের রাজনীতি ও অর্থনৈতিক পেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক।
একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর হলো, প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান এমপি মিলিয়ে ১৫-২০ জনকে একটি নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ঋষি সুনাকের সমর্থকেরা। কখন এবং কীভাবে লিজ ট্রাসকে সরিয়ে সুনাক এবং পেনি মর্ডান্টের জুটিকে মন্ত্রিসভার দুই শীর্ষ পদে বসানো যায়, ওই নৈশভোজে তারই পরিকল্পনা হবে বলে সূত্রের দাবি।
কিন্তু বিষয়টা অতো সহজও নয়। এটা ঠিক যে, কনজারভেটিভদের একাংশ মানছেন, তারা ভুল নেতা বেছে নিয়েছেন। সমস্যা যেহেতু অর্থনীতির, তাই নতুন অর্থনীতি দরকার। সুনাকের দেখানো পথেই ফিরেছেন ট্রাস। ফলে সুনাককে ফের অর্থমন্ত্রী করা যেতেই পারত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রিত্বের যুদ্ধ লড়া সুনাক এখন পেনির অধীনে কাজ করতে রাজি নন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের মতে, সরকারের আসল চাবিকাঠি এখন ট্রাস নয়, অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টের হাতে। একটি সমীক্ষাতেও ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছে ট্রাসের অপসারণের পক্ষে। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ইয়র্কশায়ারে থাকা সুনাক যদিও ট্রাসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। তার সামনের পথও মসৃণ নয়।
জানা গেছে, পেনি এবং হান্টও ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে তাকিয়ে। ট্রাসও সহজে গদি ছাড়বেন না। এদিকে, বিরোধীরা নির্বাচন এগিয়ে আনার দাবি তুলছেন।
কনজারভেটিভদের এই ছন্নছাড়া অবস্থার সুযোগ নিয়ে লেবার পার্টি পরের ভোটে ক্ষমতা দখল করতে পারে বলেই অনেকের মত। সেক্ষেত্রে হাতে গোনা কয়েক দিন প্রধানমন্ত্রী থেকে সুনাকের আদৌ কোনও লাভ হবে কি না, সেটাও বড় প্রশ্ন। সূত্র: স্কাইনিউজ, ব্লুমবার্গ, রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান




