মৃত্যুর ১৭ মাস পর রানীর শেষশয্যার পাশে ফিলিপের দেহাবশেষ আনা হল যে কারণে
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:০০:৫৪ অপরাহ্ন
রানী এ্যালিজাবেথ দ্বিতীয় ও প্রিন্স ফিলিপ – দ্য রয়েল লাভার
অনুপম প্রতিবেদক : ব্রিটেনের প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় ১১ দিন অভুতপূর্ব আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে। স্বামী প্রিন্স ফিলিপের দেহাবশেষ সিসাবদ্ধ কফিনে ১৭ মাস ধরে অপেক্ষায় ছিল রানির পাশে থেকে অন্তিমযাত্রায় সমাহিত হওয়ার জন্যে।
১৯ সেপ্টেম্বর দিনভর আনুষ্ঠানিকতা শেষে সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে রানিপুত্র রাজা চার্লস তৃতীয় কর্তৃক মা-রানী দ্বিতীয় এ্যালিজাবেথের কফিন শেষবার স্পর্শ করেন। এরপরই বিশপের ধর্মকথা পাঠের সাথে সাথে রাজকীয় পাতালকুঠুরির (রয়েল ভল্ট) দিকে নামতে থাকে রানির কফিন। তারপর নেয়া হয় রাজা জর্জ ষষ্ঠ মেমোরিয়াল চ্যাপেলে। আনা হয় তার পাশে স্বামী প্রিন্স ফিলিপের শবাধার।
পুত্র রাজা চার্লস তৃতীয় কর্তৃক শেষ স্পর্শ মা-রানি এ্যালিজাবেথের কফিন সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে।
সেখানে ভূগর্ভে রয়েছে দুটি পাশাপাশি রয়েল ভল্ট। একটি সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে, অন্যটি রাজা জর্জ ষষ্ঠ মেমোরিয়াল চ্যাপেলে। প্রথমটিতে রানির স্বামী ফিলিপের কফিন ১৭ মাস ধরে অপেক্ষমাণ। সেখান থেকে আনা হয় রাজা জর্জ ষষ্ঠ মেমোরিয়াল চ্যাপেলের ভল্টে ফিলিপের কফিন। এখানে তারা দুজনকে পাশাপাশি সমাহিত করা হয়। সেখানে আছে রানির বাবা-মা, জর্জ ষষ্ঠ এবং রানী প্রথম এলিজাবেথ, পাশাপাশি তার বোন, প্রিন্সেস মার্গারেট।
রানীকে সমাহিত করার সময় প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ জোহান সেবাস্তিয়ান বাখের কম্পোজিশন বাজান বাদকেরা। পরে চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রধান আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবুরি জাস্টিন ওয়েলবি রানির জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
চার্চ অব ইংল্যান্ডের প্রধানের আশীর্বাদ শেষ হওয়ার পর দেশটির জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
সমগ্র পৃথিবী থেকে ৪ শ কোটি মানুষ ব্রিটিশ এ রানির শেষকৃত্য টিভিতে ইউটিউবে লাইভ দেখেন। যুক্তরাজ্যে সাড়ে ৩৭ মিলিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১১ মিলিয়ন মানুষ রানির শেষ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা লাইভ দেখেন।
নেমে যাচ্ছে ধীরে রয়েল পাতালকুঠুরিতে রানির কফিন।
এ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাপানের সম্রাট নারুহিতো ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২ হাজারেরও বেশি অতিথি যোগ দেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
শেষকৃত্যে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, শেষযাত্রার পরিকল্পনা রানির মৃত্যুর আগেই করে গিয়েছিলেন। তিনি নিজেও কিছু পরিকল্পনা সংযোজন করেছিলেন। স্থানীয় সময় সেদিন সোমবার সকালে (বাংলাদেশ সময় দুপুরের পর) প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মরদেহ নিয়ে শেষকৃত্যের জন্য শেষযাত্রা শুরু হয়।
স্বামী ফিলিপের কফিন যেদিন রয়েল ভল্টে নামছিল একা হয়ে যাওয়া রানী এ্যালিজাবেথ বসেছিলেন সামনে।
লন্ডনের কেন্দ্রস্থল ওয়েস্টমিনস্টার হলে সকাল ৮টায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রানির শায়িত অবস্থার সমাপ্তি ঘটে। এরপর ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা আসেন। বেলা ১১টায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ রানির জীবন ও কাজকে স্মরণ করেন। ব্রিটেনের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীরাও অংশ নেন। ইউরোপের অন্যান্য রাজপরিবারের সদস্য এবং রানির আত্মীয়রাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
শেষকৃত্যানুষ্ঠানে রানীর বিয়ের স্তোত্র পাঠ করা হয়। ১৯৪৭ সালে তৎকালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথ এবং প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপ মাউন্টব্যাটেনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যে স্তবগান করা হয়েছিল, শেষকৃত্যানুষ্ঠানে সেটি গাওয়া হয়। রানি তার প্রিয় স্বামীকে হারান গত বছরের এপ্রিলে। তারা একসঙ্গে কাটিয়েছেন ৭৩ বছর। এর আগে রানীর জন্য ধর্মগ্রন্থ থেকে বাণী পাঠ করে শোনান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস এবং কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারনেস স্কটল্যান্ড।
রয়েল সদস্যদের সমাধিস্থল সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের ভিতর যেভাবে থাকে কফিন
পৌনে ১১টা নাগাদ ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে রানির কফিন রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানের জন্য ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্যারিসন সার্জেন্ট মেজর অ্যান্ড্রু স্ট্রোক শোকযাত্রা শুরু করেন। চার দিন ধরে রানি ওয়েস্টমিনস্টার হলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত ছিলেন। রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা, তাদের মধ্যে নতুন রাজা, তার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম এবং প্রিন্স হ্যারি গান ক্যারিজ বা কামানবাহী গাড়িকে পদব্রজে অনুসরণ করেন। এই গাড়িতে রানির কফিন নিয়ে যাওয়া হয়। স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড রেজিমেন্টের পাইপ এবং ড্রামবাদক দল এই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিল। আরো ছিল রয়্যাল এয়ার ফোর্স এবং গোর্খা সদস্যরা।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ২ হাজার অতিথি ছিলেন। এটা একটা রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। এ ধরনের অনুষ্ঠান সাধারণত রাজা অথবা রানির জন্য করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে কঠোর নিয়ম, রীতিনীতি মানতে হয়—যেমন সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে একটা ঐতিহাসিক গির্জা। এখানেই ব্রিটেনের রাজা এবং রানিদের অভিষেক হয়। এখানেই ১৯৫৩ সালে রানির অভিষেক হয়েছিল। এই গির্জাতেই তত্কালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথ ১৯৪৭ সালে প্রিন্স ফিলিপকে বিয়ে করেন। আঠারো শতকের পর এখানে কোনো রাজার শেষকৃত্য হয়নি। যদিও ২০০২ সালে রানির মায়ের শেষকৃত্য এখানেই হয়েছিল। এই রাষ্ট্রীয় আয়োজন পরিচালনা করেন ওয়েস্টমিনস্টারের ডিন ডেভিড হয়েল। সঙ্গে ছিলেন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি। প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসও ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করেন।
উইন্ডসর রয়েল চ্যাপেল
বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে শেষকৃত্যের শেষের দিকে সংক্ষেপে বিউগলের সুর বাজানো হয়। এরপর দুই মিনিট জাতীয়ভাবে নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় সংগীত এবং রানির বাঁশীবাদক দল বিষাদের সুর তোলেন। এরই মধ্যে দিয়ে দিনের মধ্যভাগে শোকসভা শেষ হয়। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে রানির কফিন নিয়ে একটা শোভাযাত্রা হেঁটে হেঁটে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে থেকে ওয়েলিংটন আর্চ, লন্ডনের হাইড পার্কের কোনায় যায়। এই রাস্তায় সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। বিগ বেন থেকে এক মিনিট পরপর ঘণ্টা ধ্বনি করা হয়। শোভাযাত্রাটি খুব ধীরে ধীরে রাজধানীর রাস্তা দিয়ে যায়। হাইড পার্ক থেকে প্রতি মিনিটে তোপধ্বনি করা হয়। সাধারণ মানুষ এই শোভাযাত্রা কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে দেখতে পান। এই শোভাযাত্রাটি রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ নেতৃত্ব দেয়। শোভাযাত্রাটি সাতটা ভাগে বিভক্ত ছিল। প্রতিটা ভাগের অগ্রভাগে ছিল আলাদা বাদকদল। যুক্তরাজ্য এবং কমনওয়েলথের সৈন্যবাহিনী শোভাযাত্রায় ছিল। পুলিশ, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। রাজা আরো এক বার রাজপরিবারের সদস্যদের নেতৃত্ব দেন। কুইন কনসর্ট ক্যামিলা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস, কাউন্টেস অব ওয়েসেক্স এবং ডাচেস অব সাসেক্স শোভাযাত্রায় অংশ নেন গাড়িতে করে।
দুপুর ১টার সময় ওয়েলিংটন আর্চে আনুষ্ঠানিকতা শেষে রানির কফিন তোলা হয় রাষ্ট্রীয় শবযানে। গ্রেনেডিয়ের গার্ড বাহিনীর সদস্যরা রানির কফিন তুলে এই শবযানে রাখেন। এই গাড়িটি রওনা হয় উইন্ডসর প্রাসাদের দিকে। বিকাল ৩টা নাগাদ এটি উইন্ডসরে পৌঁছায়। বরাস্তার দুপাশে রানির শবযান দেখার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। প্রথমে মোটরওয়ে দিয়ে শবযান যাবে বলে পরিকল্পনা থাকলেও পরে এটির রুট পরিবর্তন করা হয়। এটি যায় বিভিন্ন এলাকার ভেতর দিয়ে যাওয়া রাস্তা ধরে, অনেক ছোট ছোট শহর কেন্দ্র হয়ে, যাতে আরো বেশি সংখ্যায় মানুষ রানির শবযান দেখার সুযোগ পান। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মানুষ ফুল ছুঁড়ে দিয়ে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। রাজা এবং রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা উইন্ডসর ক্যাসেলের ভেতর কোয়ার্ডরেঙ্গেলের কর্টেজে যোগ দেন। প্রাসাদের সেবাস্টোপোল এবং কারফিউ টাওয়ারের ঘণ্টা প্রতি মিনিটে বাজানো হয়। প্রাসাদের প্রাঙ্গণ থেকে তোপধ্বনি করা হয়।
মায়ের কফিনের পাশে বিষাদাচ্ছাদিত পুত্র রাজা চার্লস তৃতীয়।
সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে কফিনটি নেওয়া হয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য। রাজপরিবারের সদস্যদের বিয়ে, দীক্ষা এবং শেষকৃত্য হয় এই গির্জায়। এখানেই ডিউক এবং ডাচেস প্রিন্স হ্যারি ও মেগানের বিয়ে হয়েছিল ২০১৮ সালে। রানির প্রয়াত স্বামী প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য হয়েছিল এখানে। অপেক্ষাকৃত কম মানুষ সমবেত হন এখানে। অনেকটা ব্যক্তিগত ধর্মসভা করা হয় যেখানে প্রায় ৮০০ অতিথি ছিলেন। এই ধর্মসভা উইন্ডসরের ডিন ডেভিড কনার পরিচালনা করেন। ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবির আশীর্বাদ নিয়ে সভাটি হয়। রানির রাজত্বের শেষ হিসেবে নানা ঐতিহ্য প্রতীকী হিসেবে স্মরণভায় উপস্থাপন করা হয়। এসময় রানির মুকুট, রাজকীয় গোলক ও রাজদণ্ড শেষবারের মতো সরিয়ে নেওয়া হয় কফিন থেকে। এ সময় আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতার পর রানীর কফিন রয়েল ভল্টে নামানো হয়। বাঁশিবাদক দল প্রার্থনা এবং ‘গড সেভ দ্য কিং’ গানটি গান। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে বলা হয়েছে, বাঁশিবাদক দলের এই পারফরম্যান্স রানি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করে গিয়েছেন। বেলা ৪টা ৩৫ মিনিটে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষ হয়। রাজা এবং রাজপরিবারের সদস্যরা চ্যাপেল ছেড়ে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পারিবারিক ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের অভ্যন্তরে অবস্থিত রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেলে রানিকে তার প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরার সঙ্গে সমাহিত করা হয়। তার সমাধির ওপর মার্বেলের ফলকে খোদাই করে লেখা থাকবে ‘দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২’।
কেন ১৭ মাস অপেক্ষা স্বামী প্রিন্স ফিলিপের দেহাবশেষ রানীর কফিনের পাশে আসার?
এ প্রশ্নের উত্তর বলা হল, Queen Elizabeth and Prince Philip were the portrait of love and devotion. Throughout their courtship and marriage, Prince Philip was the Queen’s ever loyal companion and her ever-present source of strength.
অর্থাৎ রানী এলিজাবেথ এবং প্রিন্স ফিলিপ ছিলেন পরস্পরের প্রতি প্রেম ও ভক্তির মূর্ত প্রকাশ। তাদের বিয়ে এবং বিয়েপূর্ব রোমান্টিক পত্র বিনিময়ের সময়খন্ডে, প্রিন্স ফিলিপ ছিলেন রাণীর সর্বদা অনুগত সহচর এবং তার সব সময়ের শক্তির উৎস।
তাদের সম্পর্কের সূত্রপাত ‘প্রথম দর্শনেই প্রেম’ থেকে।
ব্যতিক্রম ধরনের এ দুজন ১৯৩৯ সালে ব্রিটানিয়া রয়্যাল নেভাল কলেজে প্রথম দেখা করেছিলেন। তখন তরুণ রাজকুমারী এলিজাবেথের বয়স ছিল মাত্র ১৩ এবং সুদর্শন ফিলিপ ছিলেন ১৮ বছর বয়সী ক্যাডেট।
প্রথম দর্শনে তাদের যে মায়া ফুটেছিল অন্তরে, তা-ই ৭৩ বছর দাম্পত্য জীবনে অটুট থাকে। প্রথম পরিচয়ের পর এ্যালিজাবেথের পত্র বিনিময়ে কিছুটা আপত্তি করে রাজপরিবারের সদস্যরা। ‘ভিনদেশি লোক’ ফিলিপের সাথে এ্যালিজাবেথের বিয়ে-প্রেম ঠিক হবে না- তারা বলে। কিন্তু রানি এ ভালবাসায় অনড় থাকেন। অতঃপর বিয়ে হয়, সংসার হয়, সন্তান হয়, আমৃত্যু দুজনের সংসার অটুট থাকে।
রয়্যাল ভল্ট কি
রয়্যাল ভল্ট ১৮১০-১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের নীচে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের সমাহিত করার পাতালকুঠুরি।
১৮১৮ সালে জর্জ তৃতীয় এর স্ত্রী রানী শার্লটকে এবং দুই বছর পরে জর্জ নিজেই সমাহিত হওয়ার জন্য ভল্টটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল।
পরে ১৮৩০ সালে জর্জ চতুর্থ এবং ১৮৩৭ সালে চতুর্থ উইলিয়ামকে কবর দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। কিন্তু যদিও সেখানে প্রচুর জায়গা ছিল (এবং এখনও রয়েছে), রানী ভিক্টোরিয়া নিজের জন্যে উইন্ডসর গ্রেট পার্কের ফ্রগমোরে একটি সমাধি নির্মাণ করেছিলেন এবং এডওয়ার্ড সপ্তম এবং জর্জ পঞ্চম ছিলেন সেখানে। সকলকে সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের মেঝেতে স্বাধীন সমাধিতে সমাধিস্থ করা হয়েছে।




