সেই রেলক্রসিংয়ে ছিল না কোনো লাইনম্যান ও সিগন্যাল
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জুলাই ২০২২, ১০:০৪:০৩ অপরাহ্ন
অনুপম নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী যেখানে নিহত হয়েছেন। সেখানে কোনো লাইনম্যান ছিলেন না, এমনকি সড়কের ওপর লেভেল ক্রসিংয়ে ছিল না সিগন্যাল। ফলে বাধা ছাড়াই রেললাইনের ওপর উঠে যায় মাইক্রোবাসটি। এতে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হন মাইক্রোবাসের ১১ আরোহী। শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ট্রেনের এক যাত্রী জানান, মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের দিকে চলে যাচ্ছিল। বৃষ্টিও পড়ছিল। সড়কের লেভেল ক্রসিংয়ে সিগন্যাল বা প্রতিবন্ধক ছিল না। গেটম্যানও ছিলেন না। ফলে কোনো বাধা ছাড়াই মাইক্রোবাসটি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। তখন মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা লাগে।
সীতাকুণ্ড রেলওয়ে (জিআরপি) পুলিশ খোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সেখানে কোনো লাইনম্যান ছিলেন না। সড়কের ওপর লেভেল ক্রসিংয়ে সিগন্যাল ছিল না। এই কারণে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই রেললাইনের ওপর উঠে যায় মাইক্রোবাসটি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনসার আলী বলেন, লাইনম্যান না থাকার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি ওই সময় লাইনম্যান না থাকেন, তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১৭ জন শুক্রবার সকাল ৮টায় হাটহাজারীর আমান বাজার থেকে মাইক্রোবাসযোগে খৈয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে যান। ঘোরাঘুরি শেষে ফেরার পথে দুপুর পৌনে ২টার দিকে বারতাকিয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেন। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৬ জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী মহানগর আপ যাচ্ছিল। একই সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতীও মিরসরাই বারতাকিয়া এলাকায় একইস্থান পারাপার হচ্ছিল। বারতাকিয়া রেলক্রসিংয়ে মহানগর আপ ট্রেনটি যাওয়ার আগে ক্রসিংয়ের গেটে থাকা বাঁশ ফেলানো হয়। এ সময় মহানগর আপ বারতাকিয়া ক্রস করার সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোবাসটি বাঁশ উল্টিয়ে ট্রেনের লাইনে উঠে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা মনে করেছিলেন, ঢাকা থেকে আসা ট্রেনটি আসার আগেই যেতে পারবেন। কিন্তু রেললাইনে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রভাতী ট্রেনটি চলে আসে এবং মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ঘটনার সময় গেটম্যান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বার বার লাল পতাকা উঁচিয়ে তাদের বারণ করলেও মাইক্রোচালক শোনেননি। তার অবহেলার কারণেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। রেলের বিভাগীয় পার্সোনfল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আনছার আলীকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী।




