ইভিএমের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ডাকাত, সন্ত্রাসী গোপন কক্ষে : ইসি
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০২২, ১২:৩৯:০৪ অপরাহ্ন
নুরুল হুদার কমিশন যা অস্বীকার করেছেন, এ কমিশন তা স্বীকার করলেন
অনুপম নিউজ ডেস্ক : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান চিন্তিত ভোটকেন্দ্রের মধ্যে গোপন কক্ষে দাঁড়িয়ে থাকা ‘ডাকাত’ বা সন্ত্রাসীদের নিয়ে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। এর আগে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের ইভিএমের কাস্টমাইজেশন (কেন্দ্রভিত্তিক ভোটার ও প্রার্থীদের তথ্য ইনপুট দেওয়া) প্রক্রিয়া দেখানো হয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আহসান হাবিব বলেন, ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ‘ডাকাত’, ‘সন্ত্রাসী’ দাঁড়িয়ে থাকাই চ্যালেঞ্জ। এর বাইরে তিনি আর কোনো চ্যালেঞ্জ দেখেন না। তবে তিনি বলেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এটি হবে না।
পাঁচ বছর আগে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে ইভিএমের ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশের অভিযোগ ওঠে। তবে ওই কমিশন এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্বে নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সদস্য আহসান হাবিব প্রথমবারের মতো এ ধরনের সমস্যার কথা স্বীকার করলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব বলেন, ‘ইভিএমের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ডাকাত, সন্ত্রাসী গোপন কক্ষে একজন করে দাঁড়িয়ে থেকে বলে, আপনার ভোট হয়ে গেছে চলে যান। দিস ইজ দ্য চ্যালেঞ্জ।’
তবে তিনি বলেন, এবার সিসি ক্যামেরা থাকবে, সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে। ভেতরে গিয়ে ছবি দিলে সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। দায়ী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কমিশনের কোনো দুর্বলতা নেই, কোনো চাপ নেই। কমিশন পুরোপুরি স্বাধীন। স্বাধীনভাবেই কাজ করবেন।
ইসি সূত্র জানায়, কাস্টমাইজেশন দেখতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ২১ জন প্রতিনিধি সোমবার নির্বাচন ভবনে এসে হাজির হন। তবে পাঁচজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মাত্র দু’জন প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত প্রতিনিধি পাঠাননি।
কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ইভিএম কীভাবে কাজ করে তাও ইসির পক্ষ থেকে উপস্থিত প্রতিনিধিদের দেখানো হয়। কাস্টমাইজেশন দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি মনিরুল হক সাক্কুর প্রতিনিধিরা। অবশ্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা এই প্রক্রিয়া দেখে কেউ কেউ সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, তাঁরা ইভিএমের সোর্স কোড জানতে চেয়েছিলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তা প্রকাশ করা হবে না বলে ইসির পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে। কেউ কেউ ভোট দেওয়ার পর যে ডাটা স্টোরেজ থাকে সেটা দেখতে চেয়েছিলেন, তবে তা দেখানো হয়নি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী মাহবুবুর রহমানের প্রতিনিধি কাজী মশিউর রহমান বলেন, তিনি ইভিএমের কারিগরি দিকগুলো নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এসব বিষয়ে উত্তর পেয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ইভিএমের সফটওয়্যারের সোর্স কোড যেন তাঁদের দেখানো হয়। এটি দেখলে বোঝা যাবে, এর ভেতরে কিছু করার সুযোগ আছে কি না, যেমন ১০ ভোট এক প্রতীকে পড়বে এর পরের ভোট আরেক প্রতীকে পড়বে- এ ধরনের কিছু করা সম্ভব কি না। তবে, ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোর্স কোড প্রকাশ করা হবে না। সব মেশিনে একই সোর্স কোড ব্যবহার করা হবে।
এ বিষয়ে ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, সোর্স কোড নিরাপত্তার বিষয়। এটি কখনও কাউকে দেওয়া হবে না। কারণ এর সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। তবে মেশিন ঠিকভাবে কাজ করছে কি না, সেটা যাচাইয়ের সুযোগ থাকছে।




