হজরত শাহজালাল (র.) মাজারে ওরস ১৯ জুন
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মে ২০২২, ৭:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন
হযরত শাহজালাল রহ: এর রওজা উন্মুক্ত আকাশের নীচে
সিলেট অফিস : সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে ওরস আগামী ১৯ ও ২০ জুন। ওরস সামনে রেখে গতকাল শনিবার পালিত হয়েছে লাকড়ি তোড়া উৎসব।
এদিন ভক্ত-অনুরাগীরা ‘লালে লাল শাহজালাল’ ‘শাহজালাল বাবা কি জয়’, ‘৩৬০ আউলিয়া কি জয়’, ওলি আউলিয়া কি জয়’ স্লোগান সহকারে মাজারে যান।
এর আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার ভক্ত জড়ো হন দরগাহ প্রাঙ্গণে। নামাজের পর দরগায় মিলাদ শেষে নাগড়া বাজার সঙ্গে সঙ্গে ভক্তরা শহরতলির লাক্কাতোড়া ও মালনিছড়া চা বাগানের মাঝামাঝি নির্ধারিত টিলার উদ্দেশে রওনা দেন।
সেখানে গিয়ে আবার মিলাদ পড়া হয়। এরপরই শুরু হয় লাকড়ি সংগ্রহ। স্লোগানসহকারে মাজারে ফেরার পর মাজারের পুকুরে লাকড়ি ধুয়ে নির্ধারিত স্থানে রেখে দেন তারা। এসব লাকড়ি বা কাঠ ওরসের সময় শিন্নির রান্নার কাজে ব্যবহৃত হবে।
শাহজালালের দরগার প্রধান প্রবেশ পথ
মাজারের ভক্তরা জানান, ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হজরত শাহজালাল (র.) জীবদ্দশাতে এভাবেই লাকড়ি সংগ্রহ করা হতো। চিরায়ত সেই ঐতিহ্য বিগত ৭০০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও আভিজাত্যের গৌরব ধ্বংসের শিক্ষা নিয়ে এ উৎসব উদযাপন হয়।
হযরত শাহজালাল রহ: এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন বিষয়ক কিঞ্চিত ইতিহাস পাঠ:
‘‘সিলেট বিজয়ের পর দিল্লীর সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ, শাহ জালালকে সিলেটের শাসনভার গ্রহণের প্রস্তাব করেন। কিন্তু শাহ জালাল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। পরবর্তিতে সুলতান বিশেষ ঘোষণা জারি করে সিলেট শহরের (কসবে সিলেট) খাজানা মুক্ত করে দরবেশকে সম্মানীত করেন যা এখনো (দরগাহর সংশ্লিষ্ট এলাকা) বলবত আছে। সুলতানি আমল হতে প্রথা অনুযায়ী নবাব, বাদশা বা রাজকর্মচারীদের মধ্যে যারা সিলেট আসতেন, নানা প্রকার দালান ইত্যাদি নির্মাণ করে সম্মানের সাথে দরগাহের সংস্কার ও প্রসার সাধন করতেন। দরগাহ চত্বরে অবস্থিত স্থাপনা গুলো সুলতান ও মোগলদের আমলের নির্মিত বলে তাম্রফলক ও প্রস্তরফলকে লিখিত বিভিন্ন নিদর্শন রয়েছে। যেমন; সিলেট শহরের সর্ব বৃহৎ দরগাহ মসজিদের ফলকে লিখিত তথ্যে আছে, ‘বাংলার সুলতানদের কর্তৃক ১৪০০ সালে ইহা নির্মিত।
‘কাজল বরন কৈতর উড়ে মুইছা মনের গ্লানী রে; – কবি দিলওয়ার
শাহ জালালের সমাধি ঘিরে যে দেওয়াল রয়েছে তা লুত্ফুল্লাহ আমীন বকশী কর্তৃক নির্মিত বলে একটি ফলক সূত্রে উল্লেখ পাওয়া যায়। এভাবে বিভিন্ন দালান, মসজিদ ও পুকুর ঘাট ইত্যাদি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শাসনকর্তা সহ বাদশা ও সুলতানদের দ্বারা শাহ জালালের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে তৈরি বলে উল্লেখ আছে।’’ (সিলেট বিভাগের ভৌগোলিক ঐতিহাসিক রুপরেখা সৈয়দ মোস্তফা কামাল; প্রকাশক: শেখ ফারুক আহমদ, পলাশ সেবা ট্রাস্ট, সিলেট প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০১১; পৃ. ৩০)




