বন্যার কবলে সিলেট : অমলশিদে ভেঙেছে ডাইক, আরও অবনতির আশংকা
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২২, ২:৫১:১০ অপরাহ্ন
সিলেট অফিস: সপ্তাহব্যাপী বন্যায় সিলেটের ১৩ উপজেলা বন্যা কবলিত। সিলেট নগরীর অনেক এলাকায় হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি। বন্যায় শুধু লাখ লাখ মানুষ দুর্ভোগেই পড়েননি, সেই সঙ্গে ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকারও। পানির তোড়ে খামার ও পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বস্ব হারান তারা।
জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসস্থলের একটি ডাইক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকে জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, বানের পানি তাদের বাড়িঘর দোকানপাট ও ফসল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেক মানুষ অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
বানের পানিতে জনপদ ডুবে যাওয়া ৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ। পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়ক দিয়ে চলাচলে বিকল হচ্ছে যানবাহন।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানির নিচে।
সড়কে পানি থাকায় শিশুদের নিয়ে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামের অনেক মানুষের ফিসারিজ ছিল। পানি উপচে সব মাছ ভেসে গেছে।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসস্থলের একটি ডাইক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকে জকিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ভাঙনের ঘটনায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ভারতের সীমান্তবর্তী বরাক নদের মোহনায় ডাইকটি ভেঙে গেছে। এর পর মুহূর্তেই জকিগঞ্জের ফিল্লাকান্দি, অমলশিদ, বারঠাকুরী, খাসিরচক, খাইরচক, বারোঘাট্টা, সোনাসারসহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। একই সঙ্গে জকিগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে অমলশিদ যাতায়াতের রাস্তাটিও পানিতে ডুবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে এ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ আছে।
ডাইক ভেঙে পানি ঢুকতে থাকায় আগে থেকেই প্লাবিত উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের বরাক নদ থেকে প্রবল বেগে পানি এখন সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে ঢুকছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তীব্র পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় ডাইকটি ভাঙতে ভাঙতে আজ শুক্রবার সকাল পৌনে নয়টার দিকে ডাইকের কমপক্ষে ৬০ ফুট অংশ ভেঙে গেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সিলেট থেকে প্রায় ৯২ কিলোমিটার দূরে জকিগঞ্জের অবস্থান। এটি জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা। ভারতের করিমগঞ্জ জেলার বরাক নদের দুটি শাখা হচ্ছে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী। এদের মিলনস্থল হচ্ছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকা। এই অমলশিদে একটি ডাইক আছে। বরাক থেকে পানি এসে প্রথমে সরাসরি এ ডাইকে আঘাত করে। এরপর পানি ভাগ হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারায় প্রবাহিত হয়।
সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর মাধ্যমেই মূলত সিলেট বিভাগের প্রায় ১০০টি নদ-নদীতে পানি প্রবাহিত হয়। এখন ডাইক ভেঙে যাওয়ায় পানি কোনো বাধা না পেয়ে তীব্র গতিতে সরাসরি সুরমা ও কুশিয়ারায় গিয়ে ঢুকছে। ফলে পুরো সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।




