তাঁর প্রিয় শহরে এলো দেহখানি, নীরব নিথর…

সিলেট আমার প্রিয় শহর। এখানে এলে শান্তি লাগে

অনুপম নিউজ ডেস্ক : তিনি সপ্রাণ সর্বশেষ যখন সিলেট এসেছিলেন, ফিরে যাওয়ার সময় ১৮ মার্চ বলেছিলেন- ‘আমি আবার সিলেট আসবো। সবার সঙ্গে আবার দেখা হবে। কথা হবে’।

গণমাধ্যমে দেয়া সর্বশেষ সাক্ষাতকারে বলেছিলেন- সিলেট আমার প্রিয় শহর। এখানে এলে শান্তি লাগে।

তিনি সিলেটের কৃতিসন্তান, সাবেক অর্থমন্ত্রী, সিলেট-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত। শনিবার রাত ১০ টায় সিলেট নগরের নিজ বাসায় এসে পৌঁছে মরদেহ।

‘ঈদের সময় সিলেট আসতে চেয়েছিলেন মুহিত ভাই। আমাকে বলেছিলেন তাকে নিয়ে আসতে।’- বললেন আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনুজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড একে আবুল মোমেন।

শনিবার রাতে সিলেট নগরের ধোপাদিঘির পাড় এলাকার নিজ বাসা হাফিজ কমপ্লেক্সে দাঁড়িয়ে যখন এমনটি বলছিলেন মোমেন তখন পাশেই শুয়ে আছে মুহিতের নিস্প্রাণ, কফিনবন্দি মরদেহ।

মুহিতের মরদেহ সিলেটে আসার পূর্বেই তার বাসায় ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই এসেছেন। মুহিত যতবারই সিলেট আসতেন প্রতিবারই তার বাসায় ভিড় লেগে যেতো নেতাকর্মী-শুভানুধ্যায়ীদের। এবারও ভিড় আরও বেশি। এবার আগতদের উদ্দেশ্যও ভিন্ন। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে এসেছেন সবাই।

মুহিতের মরদেহ দেখতে আসা মানুষজনের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় প্রশাসনকে। মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়ে ভিড় কমানোর অনুরোধ সত্ত্বেও সরানো যাচ্ছিলো না জনসমাগম।

হাফিজ কমপ্লেক্সে মুহিতকে মরদেহ দেখতে আসা সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, সিলেট তথা বাংলাদেশ তার এক রত্মকে হারালো। আর আমরা হারালাম একজন অভিভাবকে। এমন নিরঅহংকার, সৎ ও পন্ডিত মানুষের অভাব আমরা সকলে অনুভব করবো।

মুহিতের অনুজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেন বলেন, রাতে বাসায়ই রাখা হবে মুহিতের মরদেহ। রোববার বেলা ১২ টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ নেয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে এক ঘন্টা রাখা হবে। জোহরের নামাজের পর আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে তাঁর জানাযা। এরপর রায়নগরে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে তাঁকে।