আগে হাওর রক্ষা করতে হবে, দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী
অনুপম নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ এপ্রিল ২০২২, ১১:২০:৩৮ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা : পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, হাওরের বাঁধ নির্মাণে কোনো ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। তবে এখন দোষারোপের সময় নয়। সবার আগে হাওর রক্ষা করতে হবে।
আজ শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১টায় মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ পরিদর্শন শেষে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে যে ভয়ঙ্কর অবস্থায় ছিল হাওরের। এটি কমেছে। পানির চাপও কমেছে। প্রকৃতি অনেকটা ভালো। যদিও আমরা সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত নই। সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, হাওর পরিদর্শনকালে একটি আনন্দের বিষয় দেখতে পেলাম কৃষকরা ধান কাটছেন। ১০ শতাংশ ধান কাটা শুরু হয়েছে। দুই তিনদিনের মধ্যে ৫০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে আশা করা যাচ্ছে।
হাওরের কয়েকটি প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমএ মান্নান বলেন, এখনও কাজ নিয়ে দোষারোপের সময় নয়, আগে হাওরের ফসলরক্ষায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে হাওরের বাঁধের কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
এরআগে মন্ত্রী নলুয়া হাওরের চার ও পাঁচ নম্বর প্রকল্পের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকায় পরিদর্শন করে স্থানীয় কৃষক ও বাঁধের কাজে সম্পৃক্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ খবর দেন। এসময় তিনি বলেন, বাঁশ, বস্তা ও মাটিসহ বাঁধ রক্ষায় যেসব উপকরণ প্রয়োজন তা যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। অর্থের বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করব। মিলেমিশে সবাই বাঁধরক্ষার কাজ করতে হবে।
পরিদর্শনকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের জাহাঙ্গীর হোসেন, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছু-দু-হা, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আকমল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল, সাবেক চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ, সিরাজুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ( ৪ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওরের ১৫টি বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়ে। এরমধ্যে ওই হাওরের ৭টি বাঁধে বারবার ধসে পড়ছিল। স্থানীয় কৃষকরা এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।
হাওরপারের কৃষকরা জানান, হাওরজুড়ে কাঁচা আধা পাকা ফসলের সমারোহ। সপ্তাহখানেকের মধ্যে পুরো হাওরের ধান পেকে যাবে। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও বৃষ্টির কারণে গত কয়েকদিন ধরে নলুয়া একের পর এক হাওরের বাঁধ ধসে পড়ছে। এতে করে ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানায়, জগন্নাথপুর উপজেলায় এবার তিন কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দে ২৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ১৫ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ চলছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, সার্বক্ষণিক হাওরের আছি। পরিস্থিতি এখন অনেকটা ভালো।